নিরাপদ সড়কের দাবিতে মিরপুরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর যুবলীগ ও ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় তাদের সঙ্গে পুলিশও ছিল বলে জানা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মিরপুর-১৪ নম্বরে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন কর্মসূচি চলছিল। পুলিশ তাদের সরাতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টাধাওয়া চলে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বেশকিছু যুবককেও লাঠি হাতে শিক্ষার্থীদের পেটাতে দেখা যায়।
https://www.facebook.com/portalbangladesh/videos/1684093795046597/
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, পুলিশের সঙ্গে যে যুবকরা শিক্ষার্থীদের পেটাচ্ছিল তারা ছাত্রলীগ কর্মী। এ সময় সেখানে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করছিলাম। পুলিশ হঠাৎ এসে আমাদের লাঠিপেটা শুরু করেছে। পরে তাদের সঙ্গে স্থানীয় যুবলীগও যোগ দিয়েছে।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের পল্লবী জোনের সহকারী কমিশনার ইয়াসমীন সাইকা পাশা বলেন, শিক্ষার্থীরা কোনো কারণ ছাড়াই কাফরুল থানায় হামলার চেষ্টা করে। পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রধান ফটক ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে। তারা পুলিশের দিকে ইটপাটকেল ছোড়ে।
তিনি বলেন, পরে পুলিশ তাদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেয়। তখন তারা ১০ নম্বর গোলচত্বরের দিকে যায়।
হামলায় পুলিশের সঙ্গে লাঠি হতে কারা ছিল এমন প্রশ্নের জবাবে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে।
উল্লেখ্য, গত রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আবদুল্লাহপুর-মোহাম্মদপুর রুটে চলাচলকারী জাবালে নূর পরিবহনের তিনটি বাসের রেষারেষিতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল করিম রাজিব ও একই কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম নিহত হন।
এ ছাড়া আরও অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। ওই ঘটনায় রোববার রাতেই রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় নিহত দিয়া খানম মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আদালত সূত্র জানায়, শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের ২০-২৫ জন শিক্ষার্থী হোটেল র্যাডিসন ব্লুর বিপরীত পাশে ফ্লাইওভার থেকে নামার মুখে যে বাসস্ট্যান্ড সেখানে দাঁড়িয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস সেখানে আসে।
কিছুক্ষণ পর একই পরিবহনের আরেকটি বাস দ্রুতগতিতে এসে দাঁড়িয়ে থাকা বাসটিকে ওভারটেক করতে গিয়ে টার্ন নেয় এবং নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। নিমিষে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের ওপর উঠে যায় বাসটি। কেউ চাকার নিচে পিষ্ট হয়, কেউ ধাক্কা খেয়ে ছিটকে পড়ে।
আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে করিম ও মিমকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।