সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদকে আটক করেছে র্যাব। শনিবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর উত্তরা থেকে তাকে নিজেদের হেফাজতে নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। র্যাবের গণমাধ্যম শাখা থেকে পাঠানো ক্ষুদে বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি) আনোয়ারুল লতিফ খান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনকে ঘিরে ফেসবুকে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে কাজী নওশাবা আহমেদকে রাজধানীর উত্তরা থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য র্যাব-১-এর কার্যালয়ে আনা হয়েছে।
শনিবার বিকালে ফেসবুক লাইভে কাজী নওশাবা দাবি করেন, রাজধানীর জিগাতলায় একজন শিক্ষার্থীর চোখ তুলে ফেলা ও চার শিক্ষার্থীকে মেরে ফেলা হয়েছে। তবে খোঁজ নিয়ে তার এসব তথ্যের কোনও সত্যতা পাওয়া যায়নি। এ কারণে বিতর্ক সৃষ্টি হয়।
ফেসবুক লাইভে নওশাবা বলেন, ‘জিগাতলায় আমাদের ছোট ভাইদের (শিক্ষার্থী ইঙ্গিত করে) একজনের চোখ তুলে ফেলা ও চারজনকে মেরে ফেলা হয়েছে। একটু আগে ওদেরকে অ্যাটাক করা হয়েছে। ছাত্রলীগের ছেলেরা সেটা করেছে। প্লিজ-প্লিজ ওদেরকে বাঁচান। তারা জিগাতলায় আছে। আপনারা এখনই রাস্তায় নামবেন ও আপনাদের বাচ্চাদের নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাবেন, এটা আমার রিকোয়েস্ট। বাচ্চাগুলো নিরাপত্তাহীনতায় আছে। আপনারা প্লিজ কিছু একটা করেন। আপনারা সবাই একসাথে হোন। আমি এ দেশের মানুষ, এ দেশের নাগরিক হিসেবে আপনাদের কাছে রিকোয়েস্ট করছি।’
নওশাবার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি নিজের চোখে এসব ঘটনা দেখেননি। অন্য কারও কাছে শুনে ফেসবুকে এসব তথ্য জানিয়েছেন। এ বিষয়ে বাংলা ট্রিবিউনের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।
দুই শিক্ষার্থীকে বাসচাপায় ‘হত্যার’ বিচার ও নিরাপদ সড়ক চাইসহ ৯ দফা দাবিতে শনিবার ষষ্ঠ দিনের মতো রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।
গত ২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের অদূরে বিমানবন্দর সড়কে (র্যাডিসন হোটেলের উল্টোদিকে) বাসচাপায় রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। ওইদিন দুপুর সাড়ে ১২টায় বিমানবন্দর সড়কের বাঁ-পাশে বাসের জন্য অপেক্ষা করার সময় জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস তাদের চাপা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলো দিয়া খানম মীম ও আব্দুল করিম। এ সময় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা জাবালে নূর পরিবহনের ওই বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় ও শতাধিক বাস ভাঙচুর করে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট চালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতকরণ ও নৌ-পরিবহনমন্ত্রীর অনৈতিক বক্তব্যের প্রতিবাদসহ ৯ দফা দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা। গত ১ আগস্ট বিকালে বাস মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠক করে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।