নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশের আদালতগুলোতে কর্মরত আইন কর্মকর্তাদের বদলে ফেলার পরিকল্পনা জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
বদলানোর এই মিছিলে উচ্চ আদালতের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল যেমন রয়েছেন; তেমনি রয়েছেন জেলা আদালতগুলোর পিপি, এপিপি, জিপি, এজিপিরাও।
তবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তার পদে বহাল থাকছেন।
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে রোববার বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের এক আলোচনা অনুষ্ঠানে আইন কর্মকর্তা বদলের এই পরিকল্পনা জানান আনিসুল হক।
তিনি বলেন, ‘অল্প কিছু দিনের মধ্যে সকল আইন কর্মকর্তাকে পদত্যাগ করতে বলা হবে।”
পরে মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল, পিপি, এপিপি, জিপি, এজিপিদের পদত্যাগ করতে বলা হবে।
নতুন আইন কর্মকর্তা নিয়োগের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, “যারা যোগ্য ও ত্যাগী, তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে। হাইব্রিডদের বাদ দেওয়া হবে।”
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায়
আইনমন্ত্রীসহ সরকারের পাঁচ মন্ত্রী অংশ নেন; যারা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিরও সদস্য।
আনিসুল হক বলেন, “আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আমরা থাকব দৃঢ় ও অবিচল। আমরা ‘খামোশ রাজনীতি’ চাই না। আমরা চাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সুপ্রতিষ্ঠিত গণতন্ত্র।”
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের ইঙ্গিত করে বলেন, “সামনে কঠিন সময় আসছে। এ সময়েও ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে।
“ঐক্যের নামে ড. কামাল হোসেন, মাহমুদুর রহমান মান্না, আ স ম আব্দুর রব, সুব্রত চৌধুরী স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে বিলীন হয়ে গেছে। আমরা চাই রাষ্ট্র ক্ষমতায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি থাকবে এবং বিরোধী দলেও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি নেতৃত্ব দেবে।”
শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ হুমায়ুন বলেন, “বঙ্গবন্ধু সাতই মার্চের ভাষণেই মুক্তিযুদ্ধ ও দেশ পুনর্গঠনের দিক-নির্দেশনা দিয়েছিলেন। আর তখন থেকেই এ দেশে শুরু হয়েছিল স্বাধীনতাবিরোধীদের ষড়যন্ত্র। দেশ স্বাধীনের পরেও যা এখনও অব্যাহত আছে। এ ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে।”
রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, “বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে আবার রাজাকার-আল শামসরা এ দেশে ক্ষমতায় এসেছিল, যাদের জিয়াউর রহমান রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিল। অথচ পৃথিবীর কোনো দেশেই পরাজিত স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি রাজনীতি করার সুযোগ পায়নি।”
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, “বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতা পূর্ণতা পেয়েছে। আমি বিশ্বাস করি মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তে ভেজা বাংলার মাটিতে আর কখনও জাতীয় সংসদে স্বাধীনতা বিরোধীরা স্থান পাবে না।”
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ হোসেন হুমায়ূনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আব্দুল বাসেত মজুমদার, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সংসদ সদস্য সাহারা খাতুন, সারোয়ার জাহান বাদশা। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংসদ সদস্য ফজলে নূর তাপস।