চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে আসতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। আগামী অর্থবছর এই প্রবৃদ্ধি আরো কমে ১ শতাংশে নেমে আসতে পারে। গতকাল সোমবার প্রকাশিত গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টে এমন পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি। দীর্ঘমেয়াদে লকডাউন এবং অর্থনৈতিক স্থবিরতায় দেশে বেসরকারি ভোগ ব্যয় ব্যাপক হারে কমে গেছে। শুধু বাংলাদেশই নয়, দক্ষিণ এশিয়ায় করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় এই অঞ্চলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি মানের ব্যবসা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থান হারাচ্ছে সাধারণ মানুষ। আস্থা কমেছে বিনিয়োগকারীদের।
জুনের প্রতিবেদনে সার্বিকভাবে এবছর বিশ্ব অর্থনীতি ৫ দশমিক ২ শতাংশ সংকুচিত হওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের বিষয়ে বলা হয়েছে, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স অনেক কমে গেছে। করোনা সংক্রমণের প্রভাব মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদে ছুটির কারণে শিল্প উত্পাদনও কমে গেছে। শ্রমিকদের বড়ো অংশ শহর ছেড়ে গ্রামে চলে গেছে। তবে অর্থনীতি ধরে রাখতে সরকারের প্রণোদান ঘোষণা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা উদ্যোগের চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে সামনের বছরগুলোতে রাজস্ব আদায়ের চাপ বাড়বে বলে মনে করছে সংস্থাটি।
বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী এবছর ভারতের প্রবৃদ্ধি হবে ৪ দশমিক ২ শতাংশ যা পরের বছর ৩ দশমিক ২ শতাংশ সংকুচিত হতে পারে। পাকিস্তানে এবছর ২ দশমিক ৬ শতাংশ সংকুচিত হতে পারে এবং শ্রীলঙ্কার জিডিপি সংকুচিত হতে পারে ৩ দশমিক ২ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে খারাপ অবস্থার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে মালদ্বীপের। দেশটির অর্থনীতি এবছর ১৩ শতাংশ সংকুচিত হতে পারে। আফগানিস্তানের জিডিপি সংকুচিত হতে পারে সাড়ে ৫ শতাংশ। শ্রীলঙ্কা এবং মালদ্বীপের অর্থনীতিতে পর্যটনের বড়ো ভূমিকা রয়েছে। তাই করোনা প্রাদুর্ভাবের ফলে দেশ দুইটি বড়ো ক্ষতির মুখে পড়েছে। তাছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনীতিতে রেমিট্যান্স বড়ো ভূমিকা রাখে। করোনার প্রভাবে তাই এই অঞ্চলে রেমিট্যান্স প্রবাহ অনেক কমে গেছে। করোনার প্রকোপ কমে আসলে সার্বিকভাবে আগামী বছর দক্ষিণ এশিয়ার প্রবৃদ্ধি সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।