একদিকে যখন ছাত্ররা কোটা আন্দোলন নিয়ে ব্যস্ত, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা যখন জনসংযোগ করছে ও নানান জায়গায় অবরোধ করছে, আরেকদিকে গতকাল সারাদেশে নাস্তিক ব্লগার এমডি মিজানুর রহমানের ফাঁসির দাবিতে রাজধানী ঢাকা সহ সারাদেশের বিভিন্ন এলাকায় দেয়াল লিখন ফুটে উঠেছে। তবে কে বা কারা এই দেয়াল লিখন গুলো লিখেছে এ নিয়ে এখন পর্যন্ত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
এমডি মিজানুর রহমান একজন ব্লগার যিনি তাঁর ব্যক্তিগত ব্লগ ও বিভিন্ন ম্যাগাজিনে তাঁর মতামত প্রকাশের জন্য পরিচিত। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ধর্মীয়, সামাজিক ও মানবাধিকার বিষয়ক লেখালেখির জন্য বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব। সাম্প্রতিক তাঁর বিরুদ্ধে এ ধরনের দেয়াল লিখনের প্রকাশকে মুক্তমনারা ভিন্নমতের কণ্ঠস্বরের প্রতি অসহিষ্ণুতার প্রবণতার অংশ হিসেবে দেখেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা ঢাকা সহ বিভিন্ন শহরের কোলাহলপূর্ণ এলাকায় এ ধরনের দেয়াল লিখন দেখেছেন বলে জানিয়েছেন। দেয়াল লিখনগুলোতে এমডি মিজানুর রহমানের নাগরিকত্ব বাতিল করা এবং তাকে ফাঁসি দেওয়ার দাবি জানানো হয়। এই দেয়াল লিখনগুলো নিম্নরূপঃ
“নাস্তিক মুরতাদ ইসলামের শত্রু, এমডি মিজানুর রহমান-এর বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বাতিল করতে হবে, এদেশে নাস্তিক মুরতাদদের ঠাই হবেনা।”
“আল্লাহর আইন অমান্যকারি, কুলাঙ্গার এমডি মিজানুর রহমান-কে অবিলম্বে গ্রেফতার করে নাগরিকত্ব বাতিল কর”
“নাস্তিক মুরতাদ এমডি মিজানুর রহমান-এর বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বাতিল করতে হবে, এদেশে নাস্তিকদের কোনও ঠাই হবে না”
মানবাধিকার কর্মীরা এই ধরনের সহিংস বক্তব্যের উত্থানের নিন্দা করেছেন, সতর্ক করেছেন যে এটি বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য একটি বিপজ্জনক নজির স্থাপন করেছে। “এটি আমাদের সমাজে লেখক এবং চিন্তাবিদরা যে হুমকির সম্মুখীন হয়েছে তার একটি উদাহরণ। একটি সভ্য দেশে আমরা কোনভাবেই ভিন্নমতকে নীরব করার উগ্রতাকে প্রশ্রয় দিতে পারি না,” বলেছেন স্থানীয় মানবাধিকার সংস্থার একজন মুখপাত্র।
এসব ঘটনায় সরকারের প্রতিক্রিয়া স্পষ্ট নয়। যাইহোক, ইসলামের সমালোচনার সাথে জড়িত পূর্ববর্তী মামলাগুলিতে বাংলাদেশে ব্লগার এবং অ্যাক্টিভিস্টদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও আইনি ব্যবস্থা বৃদ্ধি হয়েছে।