প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন এই লক্ষ্যে কাজ করছে। শনিবার বিকেলে রংপুর বিভাগীয় প্রশাসনের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সিইসি বলেন, “নির্বাচনের কাজ এগিয়ে নেয়ার জন্য বিভাগীয় প্রশাসন ও নির্বাচন কর্মকর্তাদের সাথে নিয়মিত বৈঠক করা হচ্ছে। ভোটের সময় যদি কোনো কেন্দ্রে অশান্তি বা গোলমাল ঘটে, তবে সেই আসনের নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া হবে। অশান্তি সহ্য করা হবে না। এছাড়াও, যারা অনিয়ম বা দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত, তাদেরকে নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করতে দেওয়া হবে না। গত নির্বাচনে যারাই প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্বে থেকে সমস্যা সৃষ্টি করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি আরও বলেন, “নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা এখন অনেকটাই কমে গেছে, যা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।” সিইসি জানান, এখনই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হচ্ছে না। তফসিল ঘোষণা থেকে দুই মাস আগে নির্বাচনের তারিখ জানানো হবে। তবে, নির্বাচন দ্রুত আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছে কমিশন।” এর আগে সকালে রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন, স্থানীয় প্রশাসন ও প্রার্থীদের সমন্বয়ে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব। এ জন্য আমাদের সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে।” সিইসি বলেন, “অন্য যে বড় চ্যালেঞ্জটি লক্ষ্য করছি তা হলো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন। মানুষ যেন শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারে, সে માટે আইনশৃঙ্খলা আরও ভালো হওয়ার প্রয়োজন। বর্তমানে অনেক মানুষ ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার মানসিকতা হারিয়ে ফেলেছে, তারা ভাবে, আমার ভোটের জন্য কি হবে? কেউ যদি বলে, অন্য কেউ আমার ভোট দিয়ে দেবে, তখন এই মানসিকতা তৈরি হয়। এটাই হলো অন্যতম চ্যালেঞ্জ, যার মোকাবেলায় আমাদের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে এবং সাংবাদিকদের সহযোগিতা চাই।” তিনি আরও বলেন, “বিজ্ঞানের উন্নতি, বিশেষ করে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের অপ্রয়োগ্য ব্যবহারে বড় চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে। অনেকে ফেসবুক ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুল ভিডিও ও তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছে, যেগুলো যাচাই করা গুরুত্বপূর্ণ। সাংবাদিকদের পারদর্শিতা ও দায়িত্বশীলতা নিয়েই এই সমস্যা সমাধানে ভুমিকা রাখতে হবে।” শেষ আলয়ে সিইসি জানান, অতীতে নির্বাচনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার ও প্রশাসনের লোকজনের মধ্যে যারা অবহেলা বা অপকর্মের জন্য দায়ী ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে নজরদারি চালানো হচ্ছে এবং পরবর্তী নির্বাচনে তাঁরা থাকবেন না। তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন ভবিষ্যতে কোনোটাই পক্ষপাতিত্ব করবে না। ১৮ কোটি মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে, সবার জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করতে চাই। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তি ছড়িয়ে এইভাবে গোয়েন্দাদের মাধ্যমে মোকাবেলা করা হচ্ছে। দেশের নাগরিক হিসেবে ভোটাধিকার ও দায়িত্ব কি, তা সবাইকে মনে রাখতে হবে।”