বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স গত অর্থবছরে অর্থাৎ ২০২৪-২৫ সালে অনিরীক্ষিতভাবে ৯৩৭ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করে নতুন ইতিহাস রচনা করেছে। এই তথ্য জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) এ.বি.এম. রওশন কবীর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই বিশাল মুনাফার মাধ্যমে বিমানর ইতিহাসে এক নতুন রেকর্ড তৈরি হলো। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে বিমান ৪৪০ কোটি টাকার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন করেছিল। এ বছর এর চেয়ে দ্বিগুণের বেশি মুনাফা হয়েছে, যা বিমান পরিচালনায় উৎকর্ষতা এবং দক্ষতা নির্দেশ করে।
বিমান কর্তৃপক্ষ যাত্রী ও গ্রাহকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেছে, তাদের আস্থা ও সমর্থনই এই সফলতার মূল চাবিকাঠি। এই সাফল্য এসেছে কার্যকর কৌশল, সম্পদ ব্যবস্থাপনা দক্ষতা এবং যাত্রীসেবার ধারাবাহিক উন্নতির ফলে।
১৯৭২ সালে মাত্র ১ কোটি ৯০ লাখ টাকার আয়ে যাত্রা শুরু করা বিমান ধীরে ধীরে দেশের সীমিত সম্পদ ও অবকাঠামো মোকাবিলা করে আধুনিক ও প্রতিযোগিতামূলক এয়ারলাইন্সে রূপান্তরিত হয়েছে।
বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কোম্পানির মোট আয় হয়েছে ১১,৬৩১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা, যা প্রতিশ্রুতিময় অগ্রগতির চিহ্ন। এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি আয় করে বিমান অন্যান্য সংস্থাগুলোর মধ্যে আলাদা স্থান করে নিয়েছে।
বিএ মিনিটে, প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে ১৯টি নিজস্ব উড়োজাহাজের মালিক, যার মধ্যে রয়েছে অত্যাধুনিক ও জ্বালানি সাশ্রয়ী চারটি বোয়িং ৭৮৭-৮ এবং দুটি বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার।
বিমানের নিজস্ব বহর রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষমতা একটি বড় শক্তি হিসেবে বিবেচিত, যা লাইন রক্ষণাবেক্ষণ থেকে বড় পরীক্ষা (চেক) পর্যন্ত সবই বাংলাদেশে সম্পন্ন করতে পারে, এতে বিপুল খরচের Savings হয়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, বিমানটি ৩৪ লাখ যাত্রী পরিবহন করেছে, ৪৩,৯১৮ টন কার্গো সরবরাহ করেছে এবং কেবিন ফ্যাক্টর ৮২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যা আগের বছরে তুলনায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি। পাশাপাশি, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে বিমানের ইতিহাসে সর্বোচ্চ টিকেট বিক্রির রেকর্ড তৈরি হয়েছে।
এ.বি.এম. রওশন কবীর আরও জানান, বিমানটির লক্ষ্য হলো জাতীয় গৌরবের সাথে বিশ্বমানের সেবা, নির্ভরযোগ্যতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় এয়ারলাইন্স হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করা।
ভবিষ্যত পরিকল্পনাগুলোর মধ্যে রয়েছে নতুন জনপ্রিয় গন্তব্যে রুট সম্প্রসারণ, ডিজিটাল রূপান্তর, যাত্রীসেবা উন্নত করা ও কার্গো সেবা শক্তিশালী করা। এসব উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের প্রথম সারির এয়ারলাইন্স হয়ে ওঠার যে লক্ষ্য, তা অর্জন করে ভারতীয় মহাসাগরীয় অঞ্চলে আরও উচ্চ স্থান দখল করতে চায় বিমান।