যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই বছরের শেষ দিকে ভারতের সফরের পরিকল্পনা করেছিলেন। তবে বেশ কিছু কারণে তিনি এই পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। নিউইয়র্ক টাইমসের অনলাইন সংস্করণে শনিবার প্রকাশিত এক বিশ্লেষণে এ তথ্য জানানো হয়। এই সফরটি মূলত কোয়াড শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্যে নির্ধারিত ছিল।
নিউইয়র্ক টাইমসের বিশ্লেষণে এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘দ্য নোবেল প্রাইজ অ্যান্ড আ টেস্টি ফোন কল: হাউ দ্য ট্রাম্প-মোদি রিলেশনশিপ আনরাভেল্ড’ (নোবেল পুরস্কার ও এক তিক্ত ফোনকল: ট্রাম্প-মোদি সম্পর্কের অবনতি)। এতে বলা হয়, ট্রাম্পের কাছ থেকে জানা গেছে যে, তিনি মোদির সাথে চলতি বছরের জুনে ফোনালাপে উল্লেখ করেছিলেন, “আসন্ন কোয়াড শীর্ষ সম্মেলনে তিনি ভারতে আসবেন।” তবে এখন আর সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে না।
এই বিশ্লেষণে বলা হয়, কিছু মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ট্রাম্প তার পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। এখন সবার ধারণা, সম্পর্কের কিছু নেতিবাচক পরিবর্তনের কারণে এই সফর আর হচ্ছে না। এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র বা ভারতের কোনোরকম সরাসরি মন্তব্য করেনি।
অভ্যাসে দেখা যায়, জানুয়ারিতে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার আগে ট্রাম্প প্রশাসন কোয়াডভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক আয়োজন করেছিল। এরই ধারাবাহিকতায় তার পরিকল্পনা ছিল এই বছর শেষে ভারতে কোয়াড শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার।
তবে, গত কয়েক মাসে ওয়াশিংটন এবং নয়াদিল্লির মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। নিউইয়র্ক টাইমসের বিশ্লেষণে ট্রাম্প ও মোদির সম্পর্ক কতটা অবনতি হয়েছে, তা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো, ট্রাম্প দাবি করেছিলেন যে, মে মাসে ভারত-পাকিস্তানের সংঘর্ষে তিনি মধ্যস্থতা করেছেন। পাকিস্তান এই দাবি স্বীকার করলেও, ভারত তা অস্বীকার করেছিল। এরপর, ১৭ জুন মোদির সঙ্গে ফোনালাপে ট্রাম্প একই দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন, যা মোদির ধৈর্যচ্যুতি ঘটায়।
ফোনালাপের আগে, মে মাসে কানাডায় অনুষ্ঠিত জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের মাঝে মোদি-ট্রাম্প বৈঠকের পরিকল্পনা ছিল। তবে ট্রাম্প দেশ ফিরে যাওয়ায় সেই বৈঠক আর হয়নি। এরপর ১৭ জুনে দুই নেতার মধ্যে ৩৫ মিনিটের কথা বলার সময় সম্পর্ক আরও টানাপোড়েনে পড়ে যায়।
অবশেষে, ওয়াশিংটন ও নয়াদিল্লির সম্পর্কের এই তিক্ততার অন্যতম কারণ হলো ভারতের পণ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে জাতীয় শুল্কের অর্ধেকের বেশি শুল্ক আরোপ, যা গত বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হয়েছে। এই শুল্কের কারণে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মধ্যে আরও চাপ সৃষ্টি হয়েছে।