নওগাঁ প্রতিনিধি
আইনের আশ্রয় নিতে গিয়েছিলেন স্বামীকে শাস্তি দেওয়ার জন্য। কিন্তু তারই নির্মমতায় প্রাণ হারালেন জুথি খাতুন (২৩) নামে এক তরুণ গৃহবধূ। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নওগাঁ সদর উপজেলার কাঠাতলী এলাকায় এই হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে।
নিহত জুথি সদর উপজেলার আনন্দনগর মৃধাপাড়া গ্রামের ঝুন্টু প্রামানিকের মেয়ে। প্রেমের সম্পর্কের বিয়ের মাধ্যমে শুরু হলেও, শেষ পর্যন্ত সেই সম্পর্ক রূপ নেয় বিভীষিকায়। প্রিয় মানুষটির প্রতারণা ও স্বজনের দুঃখে জুথির জীবনটাই ঝরে যায়।
জু Thinি খাতুনের বাবা ঝুন্টু প্রামানিক কান্নার ধারা যুক্ত করে বলেন, প্রায় এক বছর আগে প্রেম করে গাজীপুরের তানভীর नामের এক যুবকের সঙ্গে তার মেয়ে বিয়ে করে। প্রথম দিকে সব ভালোই চলছিল। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে তার জানতে পারে, তানভীরের অন্য একটি স্ত্রী রয়েছে। এই জেনে মেয়েটি অনেক সহ্য করেছে। পরে সে অন্যায় স্বীকার না করে নিজ গ্রামে ফিরে আসে এবং আদালতের দ্বারস্থ হয়।
বৃহস্পতিবার ছিল সেই মামলার শুনানির দিন। সকালে আদালতে যাওয়ার জন্যบ้าน থেকে রওনা দেয় জুথি। কিন্তু তার জন্য তা আর সম্ভব হয় না। কাঠাতলী মোড়ে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই ওঁত পেতে থাকা তানভীর ছুরি হাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। একের পর এক ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। আশেপাশের মানুষ দ্রুত আহত জুথিকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতাল নিয়ে যায়, কিন্তু চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার বর্ণনা শুনে স্থানীয়রা চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। সকালে ব্যস্ত সড়কটি হঠাৎ থমকে যায় সেই রক্তাক্ত দৃশ্যের সামনে। একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “মেয়েটা রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ একজন যুবক দৌড়ে এসে ছুরি চালাতে দেখি। আমাদের চোখের সামনে সব কিছু ঘটে গেল।”
এ বিষয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয় ঘটনা। তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ঘাতককে দ্রুত গ্রেফতারের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন, এই ঘটনায় শুধু এক তরুণীর জীবনই শেষ হয়নি, বরং সমাজের ওপরও প্রশ্ন উঠেছে। যেখানে একজন নারী সহজে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরেও নিরাপদে থাকেন না। সবাই প্রশ্ন তুলছেন, জুথির কী দোষ ছিল? শুধু এক ভালোবাসা চাওয়া, সম্মান চাওয়া নারী কি জীবন দিতে হলো এই ঘটনার মাধ্যমে?
	    	





