নেপালে সরকারবিরোধী আন্দোলন ভয়াবহ সহিংসতায় পরিণত হয়েছে। উত্তেজিত বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় ঝ مسا করে ব্যাপক হিংসা ছড়িয়েছে এবং এতে দেশের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রাণে বাঁচতে হেলিকপ্টারের দড়ি ধরে পালানোর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, সামরিক হেলিকপ্টার থেকে দড়ি ধরে মন্ত্রী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা মরিয়া করে দ্রুত পালাচ্ছেন।
মঙ্গলবার ৯ সেপ্টেম্বর, রাজধানী কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন স্থানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা ব্যাপক আকারে আঘাত হানে। তারা সরকারি কর্মকর্তা, মন্ত্রী এবং এমপিদের বাসভবনে হামলা চালায়। বিশেষত তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রী পৃথী সুব্বা গুরুঙ্গের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়, উপপ্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু পাউডেলের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয় এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখকসহ বেশ কয়েকজনের বাসায় হামলা হয়। এমনকি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের গভর্নর বিশ্ব পাউডেলও নিরাপদ থাকেননি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, উত্তেজিত জনতা রাস্তায় ধাওয়া দিয়ে অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু পাউডেলকে মারধর করছে। আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা ও তার স্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরজু রানা দেউবা, রক্তাক্ত অবস্থায় বিক্ষোভকারীদের হাতে পড়েছেন। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে ওঠে যে সেনারা হেলিকপ্টার ব্যবহার করে মন্ত্রী ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের উদ্ধারের জন্য কার্যক্রম চালায়। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, দড়ি বা রেসকিউ বাস্কেটে করে সেনারা মন্ত্রীদের একটি হোটেলের ছাদে নামিয়ে আনছে। আকাশে তখন ঘন কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রধানত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা খবরের সূত্রে জানা গেছে, এই সহিংসতার সূচনা হয় দেশের মধ্যে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা নিয়ে। তবে তা দ্রুতই বিস্তার লাভ করে প্রাদেশিক সহিংসতায় রূপ নেয়। রাজধানী কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন এলাকায় সরকারি-বেসরকারি অফিস, প্রতিষ্ঠান, সংসদ ভবনসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আঘাত হানেন আন্দোলনকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কারফিউ ও সেনা মোতায়েন করা হয়।
অবশেষে, আন্দোলনের ব্যাপক তাপে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি বাধ্য হয়ে পদত্যাগ করেন। বুধবার সেনারা রাজধানীর রাস্তায় টহল দেয় এবং জনগণকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেয়।
ইতিমধ্যে, এই সহিংসতায় জেন-জেড প্রজন্মের অংশগ্রহণ এবং মন্ত্রীদের হেলিকপ্টারের দড়ি ধরে পালানোর দৃশ্যগুলো দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় তুলেছে, যা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও অস্থির করে তুলছে।