বাজারের মূল্যমাত্রা থেকে বিশ্বের অন্যতম বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনের দাম আবারও নিম্নমুখী হয়েছে। এর কারণ হলো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চীনের পণ্যগুলোর ওপর শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা, যা বিশ্ববাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। গত শুক্রবার এই দাম পতনের ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার ট্রাম্প ঘোষণা করেন, তিনি চীনা রপ্তানি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন। এর পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রে এই গুরুত্বপূর্ণ সফটওয়্যার রপ্তানির নিয়ন্ত্রণও কঠোর করা হবে। এর আগে, চীন চলমান পরিস্থিতিতে দুর্লভ খনিজ রপ্তানিতে সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছিল। এই সব পদক্ষেপের পাল্টা হিসেবে ট্রাম্পের এই শুল্ক অবনমন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য যুদ্ধের উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তোলে। খবর রয়টার্সের।
এই উত্তেজনার ফলশ্রুতিতে বিশ্ববাজারে বেশ দ্রুত প্রভাব পড়তে শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার সূচক এসঅ্যান্ডপি ৫০০ দুই শতাংশের বেশি পতনের মাধ্যমে পতন ঘটেছে। পাশাপাশি বিটকয়েনের দাম ৮ দশমিক ৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪ হাজার ৭৮২ ডলারে। একই সময়ে দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রিপ্টোকারেন্সি ইথেরিয়ামের দরও কমে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ, যা ৩ হাজার ৬৩৭ ডলারে নেমে এসেছে।
বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। বিটকয়েনের দাম কখনও ১ লাখ ১০ হাজার ডলারের কাছাকাছি উঠলেও আবার মুহুর্তের মধ্যে ১ লাখ ৫ হাজার ডলারের নিচে নেমে আসে। একের বেশি দিনে এই দর ১৩ দশমিক ১৫ শতাংশ পর্যন্ত পতিত হয়েছে। ফলে, বিটকয়েনের মোট বাজারমূল্য কমে ২ দশমিক ২৩ লাখ কোটি ডলার হয়ে গেছে। একই সঙ্গে শেয়ারে বিক্রির চাপ বাড়তে থাকে, বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকি এড়াতে দ্রুত সম্পদ বিক্রির দিকে মনোযোগ দেন।
তবে কিছু দিন আগে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ এবং স্পট বিটকয়েন ইটিএফের চাহিদার কারণেই বিটকয়েনের দাম রেকর্ড ১ লাখ ২৫ হাজার ডলারের ওপরে উঠেছিল। কিন্তু চলমান ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা ও বাণিজ্যযুদ্ধের আশঙ্কা একেবারে বিনিয়োগকারীদের ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে দুরে সরিয়ে আনছে। এতে ইথেরিয়াম ও এক্সআরপি-এর মতো বিকল্প ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্যও ২ থেকে ৫ শতাংশ কমে গেছে।
২০১৯ সালে দ্বিতীয়বারের জন্য নির্বাচিত হওয়ার পর, মার্চ মাসে ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশ দেন, যেখানে তিনি ‘ক্রিপ্টোকারেন্সির কৌশলগত রিজার্ভ’ গঠনের নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে, তিনি বিখ্যাত ক্রিপ্টো প্রোফাইল ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেন, যেমন মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) চেয়ারম্যান হিসেবে পল অ্যাটকিনস, আর ডেভিড স্যাক্সকে দায়িত্ব দেন হোয়াইট হাউসে। খবর ইকোনমিক টাইমসের।
২০২৫ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিপ্টো খাতে বিভিন্ন নীতিমালা গ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন স্টেবলকয়েনের জন্য নতুন নিয়ম, ও এসইসির বিধি সংস্কার। এসব নীতির কারণে বিটকয়েনের দাম বছরের শুরুতে ধারাবাহিক বৃদ্ধির দেখায়। তবে সাম্প্রতিক বাণিজ্য উত্তেজনা, ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি এবং ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে কয়েক দিন ধরেই ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজারে দর পতনের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
	    	





