বাংলাদেশের পদ্মা সেতুতে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ক্যাশলেস, ননস্টপ ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন (ETC) সিস্টেম চালু হয়েছে, যা দেশের টোল পরিশোধ প্রক্রিয়াকে দ্রুত, স্বচ্ছ ও আরও আধুনিক করে তুলেছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে যানবাহনের জন্য টোল পরিশোধের প্রক্রিয়া হয়ে উঠেছে আরও সহজ ও সুবিধাজনক।
বর্তমানে বিকাশ, ট্রাস্ট ব্যাংকের TAP অ্যাপ এবং মিডল্যান্ড ব্যাংকের অ্যাপের মাধ্যমে এই সিস্টেম ব্যবহার করা যাচ্ছে। ব্যবহারকারীরা বিকাশ অ্যাপে গিয়ে ‘টোল’ অপশনে ক্লিক করে ‘মোটরযান রেজিস্ট্রেশন করুন’ অপশনে প্রবেশ করে, গাড়ির নম্বর ও চেসিস নম্বরের শেষ চার ডিজিট দিয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পারেন। যখন রেজিস্ট্রেশন হয়, তখন একেবারে ফিরতি এসএমএসে একটি Ekpass ID পাঠানো হয়।
এই Ekpass ID দিয়ে বিকাশ অ্যাপের ‘Pay Bill’ অপশনে গিয়ে ‘D-Toll Top-Up’ নির্বাচন করে রিচার্জের পর, পদ্মা সেতুর মাওয়া টোল প্লাজার নিকটস্থ রেজিস্ট্রেশন বুথে বিআরটিএ অনুমোদিত RFID ট্যাগ যাচাই করে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে। একবার রেজিস্ট্রেশন হয় গেলে, যানবাহন অন্তত ৩০ কিলোমিটার বা ঘণ্টায় দ্রুতগতিতে ETC লেন ব্যবহার করে নির্বিঘ্নে পার হতে পারে।
১৮ অক্টোবর সেতু বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ এসব প্রযুক্তির কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং ইটিসি সেবা ব্যবহার করে পদ্মা সেতু পারাপার করেন।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সালে ট্রাস্ট ব্যাংকের TAP অ্যাপের মাধ্যমে এ সিস্টেমের লাইভ পাইলটিং শুরু হয়, এবং এরপর থেকে ধীরে ধীরে এর কর্মপরিসর বাড়ছে। এখন পর্যন্ত এই সিস্টেমের মাধ্যমে মোট ১,৮১৪টি যানবাহন পারাপার হয়েছে এবং মোট টোল আদায় হয়েছে ৩৪,৯১,৭০০ টাকা।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান মহোদয় এই প্রকল্পের উদ্বোধন ও নির্দেশনা দেন, যা দেশের টোল ব্যবস্থাপনায় একটি বড় অগ্রগতি। এটি জ্বালানি, সময় ও মানবসম্পদের অপচয় কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ভবিষ্যতে আরও বেশ কিছু ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাপ এই সেবার আওতায় যুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের এর আউটিএআই (a2i) উদ্যোগ এই কাজের দেখভাল করছে এবং বিভিন্ন ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডারদের সঙ্গে সংযোগ বৃদ্ধি করছে।
অবশেষে, এই ক্যাশলেস, ননস্টপ ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন সিস্টেম দ্বারা পদ্মা সেতুর ব্যবহারকারীরা দ্রুত, নিরাপদ এবং স্বচ্ছভাবে টোল পরিশোধ করতে পারবেন, যা বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরকে একটি যুগান্তকারী ধাপ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।