যুব ও নারীবোর্ড ইসলামকে গভীরভাবে ধারণ করছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদে যে রূপ দেখা যাচ্ছে, তা ভবিষ্যতেও দৃশ্যমান থাকবে। এ পরিস্থিতির চিত্র অখণ্ড বাংলাদেশ দেখবে ইনশাআল্লাহ।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার এক জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন। এখানে তিনি ইসলামী ইতিহাসে নারীর ভূমিকা ও অবদান তুলে ধরেন। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বর্তমানে আমাদের যুব সমাজ ও মায়েদের মধ্যে ইসলামের প্রতি গভীর আস্থা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই আস্থা জাতীয় পর্যায়েও এমনভাবে ছড়িয়ে পড়েছে যে, তিনটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মেয়েদের এবং তরুণদের মধ্যে ছাত্রশিবিরের ওপর বিশাল আস্থা দেখা যাচ্ছে। এই দৃশ্যভূমি ভবিষ্যত বাংলাদেশের জন্য এক শুভ লক্ষণ বলেও বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন।
আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশের ৯১ শতাংশ মুসলমান বলে আমরা গর্ব করি। আমাদের মূল শিক্ষা হচ্ছে, মাতৃসম্মান ও মর্যাদার আদর্শে জীবনযাপন করা। সরকারের পাশাপাশি মহিলারাও দেশের উন্নয়নে সক্রিয় অবদান রাখতে পারবেন—প্রয়োজনে কেবল পুরুষই নয়, নারীও নেতৃত্বে থাকতে পারে।
শফিকুর রহমান আরও বলেন, আমাদের দায়িত্ব হলো দেশের নাগরিকদের সম্মান দেওয়া। তারা যদি বিভিন্ন ধর্ম, ভাষা ও রঙের হন, তাদের প্রতি সম্মানই আমাদের মূল লক্ষ্য। তিনি এ যেনতেন ভাববাদে না গিয়ে, প্রকৃত মানুষের প্রতি সম্মান বজায় রাখতে উদ্বুদ্ধ করেন। দেশের অর্থনীতি বর্তমানে দুর্বল থাকলেও একসাথে প্রবল চেষ্টা ও ত্যাগের মাধ্যমে এটি শক্তিশালী করা সম্ভব, বলেন তিনি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
আনুষ্ঠানিক সমাজ গড়তে তিনি বলেন, যেখানে শাসকরা জনগণের কাছে ক্ষমা চাইবে, ভুল স্বীকার করবে, বাহবা বা স্লোগান চাওয়া থেকে বিরত থাকবে। তারা শুধু জনগণের ভেতর একটি উত্তেজনা তৈরি না করে, নিজেদের ভুল বোঝার ও সংশোধনের মনোভাব নিয়ে কাজ করবে।
তিনি বলেন, যুব সমাজ সিদ্ধান্ত নেবে, নারীরা পথ দেখাবে—তখনই পরিবর্তন আসবে। আমাদের প্রথম অঙ্গীকার হলো, একটি উন্নত ও সুশিক্ষিত সমাজ গড়ে তোলা। কারণ, শিক্ষাই জীবনের মূল ভিত্তি।
দ্বিতীয়ত, সমাজের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়া দুর্নীতি দমনের জন্য সবাইকে ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে ডাকসু, জাকসু ও চাকসুর মতো ছাত্র সংগঠনগুলোও সোচ্চার ভূমিকা পালন করবে।
তৃতীয়ত, প্রত্যেক ব্যক্তির ন্যায্য প্রাপ্য অধিকার ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে, যেন সাধারণ মানুষের হক বাধা ও প্রতিকার থেকে বঞ্চিত না হন। এভাবে দেশের সমাজ বিনির্মাণের অভিলাষ ব্যক্ত করে তিনি সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।






