নেতিবাচক পরিস্থিতিতে ভুগে নিজেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার এক যুবক। বিদেশ যেতে না পারার হতাশা ও অসহায়ত্ব থেকেই তিনি অন্যদের বোঝাতে নিজের ক্ষত্তি ও কষ্ট ফুঁটে দিয়েছেন এক মাইক বাজিয়ে এলাকার মানুষকে গালাগাল করে। এরপর সেই ক্ষোভের ভিডিও তিনি নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করলে তা মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়।
ঘটনাটি ঘটে হোসেনপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ পানান গ্রামে। যুবকের নাম সারোয়ার হোসেন রাব্বি। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই সৌদি আরবে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছিলেন। তবে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়নি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, রাব্বি বিভিন্ন এনজিও ও সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্য চাইছিলেন; কিন্তু কেউ তাঁর পক্ষে সহৃদয়তা প্রদর্শন করেননি, ফলে তার ভিতরে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। শনিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরের দিকে রাব্বি ক্ষোভে ভুগে ৫০০ টাকা খরচ করে একটি মাইক ভাড়া নেন। এরপর তিনি গ্রামে গর্জে উঠেন এবং এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে গালিগালাজ করতে থাকেন।
ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি অভিযোগ করেন, তিন-চার মাস ধরে সৌদি যাওয়ার চেষ্টা করেও মাত্র এক লাখ টাকা সংগ্রহ করতে পারেননি। তার ভিসার মেয়াদ ও মেডিকেল মেয়াদ (৩০ অক্টোবর নির্ধারিত) শেষ হওয়ার পথে। এছাড়া বিভিন্ন সমিতির কাছ থেকে ঋণ নেয়ার জন্য গেলে ঘুষ হিসেবে ২৫ হাজার টাকা দাবি করা হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন।
রাব্বি বলছেন, “মানুষের কারণে আমার ভিসা দু’বার নষ্ট হয়েছে। এবারও কেউ সাহায্য করেনি। সেই ক্ষোভে আমি এই অসভ্য ভাষায় গালাগাল করলাম।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমি বিবাহিত এবং একজন ছোট সন্তানের পিতা। জীবিকার জন্য অটোরিকশা চালাই এবং বিকাশের ব্যবসাও করি।”
ভিডিওর ক্যাপশনে রাব্বি দুঃখ প্রকাশ করে লিখেছেন, “প্রথমে ক্ষমা চাইছি। আমি অনেক খারাপ ভাষায় গালাগাল করেছি। আমি কেন এমন করেছি, শুনুন।”
প্রথমে এলকায় বিষয়টি গুরুত্ব না পেলেও, ভিডিও ভাইরাল হলে সাধারণ মানুষ এবং এলাকাবাসীর মধ্যেও ব্যাপারটি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। কেউ কেউ রাব্বির মানসিক কষ্ট ও পারিবারিক চাপের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে থাকেন। একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “এমন ঘটনা আগে কখনো তো শুনিনি। এখন চায়ের দোকানে, ঘরে ঘরে সবখানে রাব্বির এই ঘটনাটি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।”






