জর্জ ‘টুতো’ কুইরোযাকে পরাজিত করে মধ্যপন্থি নেতা রদ্রিগো পাজ বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয় অর্জন করেছেন। এই ফলের মাধ্যমে দেশটিতে প্রায় দুই দশকের বামপন্থী শাসনের অবসান ঘটলো। নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের প্রাথমিক ফলের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টির সেনেটর রদ্রিগো পাজ রান-অফে ৫৪.৫ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। যদিও তিনি প্রেসিডেন্ট হলেও পার্লামেন্টে পাজের দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা এখনই নেই, তাই সরকার গঠনের জন্য তাকে অন্য দলের সঙ্গে জোট ושার্ট করতে হবে। আগামী ৮ নভেম্বর তিনি তার দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। বিজয়ীর ভাষণে পাজ বলেছিলেন, ‘আমাদের অবশ্যই বিশ্ববাসীর সামনে বলিভিয়াকে খুলে দিতে হবে।’ ৫৮ বছর বয়সি এই সেনেটরয়ের বিজয়ে দক্ষিণ আমেরিকার দেশটিতে রাজনৈতিক মহলে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। ২০০৬ সাল থেকে বলিভিয়া মূলত মাসের শাসনে ছিল, যারা একসময় আদিবাসী সম্প্রদায়ের বৃহৎ সমর্থন পেয়ে আসছিল। এখন পাজ বলিভিয়ার সামাজিক নীতিগুলো বজায় রাখার পাশাপাশি বেসরকারি খাতের উন্নয়নেও গুরুত্ব দিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যা সাবেক প্রেসিডেন্ট ইভো মরালেসের সময়ের মতোই বেশ কিছু ভোটারকে আকর্ষণ করেছে। অনেক ভোটারই আশঙ্কা করেছিলেন যে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে নির্বাচনের ফলাফল অন্যরূপ হতে পারে। বিশেষ করে, দেশটির প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানির হার কমে যাওয়ায়, মূল্যস্ফীতি ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছায়, এবং জ্বালানি সংকট দেখা দেয়। নির্বাচনের আগে দুই প্রার্থীই বলেছিলেন, দেশের অর্থনীতি ও রাজনৈতিক কাঠামো পরিবর্তনের জন্য তারা নতুন দিশায় এগোবেন। পাজ চাইছেন ধীরে ধীরে সংস্কার চালাতে, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য করের প্রণোদনা দিতে, অঞ্চলে স্বায়ত্তশাসন প্রদান করতে। অন্যদিকে, কিরোগা প্রস্তাব দিয়েছেন ব্যাপক খরচাপাতি ও আইএমএফ থেকে আর্থিক সহায়তা নেওয়ার। পাজের এই জয়ে মনে করা হচ্ছে, বলিভিয়ার গণতন্ত্র নতুন এক মোড়ে এল। অনেক ভোটারই এই পরিবর্তনকে স্বাগত জানাচ্ছেন, তবে কিছু এখনো রক্ষণশীলতার উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। উল্লেখ্য, দেশের অর্থনীতি ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়েছে, প্রাকৃতিক গ্যাসের রপ্তানি কমে গেছে, এবং মূল্যস্ফীতি ছাড়িয়েছে ৪০ বছর। পাজের পরিকল্পনা ধীরে ধীরে পরিবেশ ও অর্থনৈতিক নীতি পরিবর্তনের, যেমন, করের প্রণোদনা, অঞ্চল ভিত্তিক স্বায়ত্তশাসন, ও ধীরে ধীরে জ্বালানি ভর্তুকি কমানো। তবে চ্যালেঞ্জও কম নেই, যেমন, পার্লামেন্টে জোট গঠন, জ্বালানির আমদানি ও সরবরাহ নিশ্চিতকরণ। দেশের প্রধান শ্রমিক সংগঠনও সতর্ক করে বলেছে, তারা সামাজিক ও অর্থনৈতিক অর্জন রক্ষা করবে, যাতে প্রতিবাদ বা আন্দোলন এড়ানো যায়। পার্লামেন্টে পাজের দল অপ্রতিযোগিতার মুখে, তবে কিছু রক্ষণশীল দল এখনও পার্লামেন্টে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। ফলে, সরকারকে অনেক কৌশল অবলম্বন করতে হবে আগামী দিনগুলোয় দেশে স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার রক্ষায়।