বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের সরকারি প্রতিনিধিদল পাঁচ দিনের কৌশলগত সফরে সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছেছে। এই সফরের মূল লক্ষ্য হলো আগামী ২০ থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে কোরিয়ান বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা ও পারস্পারিক সহযোগিতা জোরদার করা। প্রতিনিধি দলে বিডার পাশাপাশি বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা রয়েছেন। এই সফরটি বাস্তবায়িত হচ্ছে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) কারিগরি সহযোগিতায়। সফরটির অংশ হিসেবে ২১ থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত একাধিক সরকারী-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (জিটুবি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠীগুলোর সাথে আলোচনা হবে। বৈঠকে বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স, জাহাজ নির্মাণ, বিদ্যুৎ উৎপাদন, টেক্সটাইল, কেমিক্যাল ও ভারী নির্মাণ খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি প্রতিনিধিদল কোরিয়ান বাণিজ্য, শিল্প ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের (এমওটিআইই) উপমন্ত্রীসহ উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করবে এবং বিভিন্ন জিটুজি আলোচনা হবে। এসব বৈঠকে দেশ দুটির মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব ও কোরিয়া-বাংলাদেশের মধ্যে সমন্বিত অর্থনৈতিক চুক্তি (সিইপিএ) নিয়ে আলোচনা হবে, পাশাপাশি সাম্প্রতিক বাণিজ্য নীতিনির্ধারণের বিষয়গুলোও প্রাধান্য পাবে। সফরের অন্যতম প্রধান আয়োজন হলো ‘গেটওয়ে টু গ্রোথ: ইনভেস্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক বিনিয়োগ সেমিনার, যা আগামী ২১ অক্টোবর সিউলে অনুষ্ঠিত হবে। এটি ফেডারেশন অব কোরিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ (এফকেআইর) সহযোগিতায় বিডা ও বাংলাদেশের দূতাবাস যৌথভাবে আয়োজন করছে। এই সেমিনারে বাংলাদেশের বিনিয়োগের পরিবেশ, সুযোগ-সুবিধা ও প্রস্তুতি তুলে ধরা হবে। আরও বলা হবে ইয়ংওয়ান করপোরেশনের মতো সফল কোরিয়ান বিনিয়োগকারীরা তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের অভিজ্ঞতা ও সাফল্যের গল্প শেয়ার করবেন, যা দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্ব গড়ে তুলবে। বিডার ব্যবসা উন্নয়ন বিভাগের প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি বলেছেন, ‘দক্ষিণ কোরিয়া আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অংশীদার। এই সফরের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশকে কোরিয়ান বিনিয়োগকারীদের জন্য পরবর্তী কৌশলগত উৎপাদন ও রপ্তানি কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আমাদের লক্ষ্য- একদিকে উচ্চপ্রযুক্তি শিল্পে বিনিয়োগ আকর্ষণ করা, অন্যদিকে এমওটিআইই’র সঙ্গে উচ্চস্তরের নীতিগত সংলাপের মাধ্যমে বাজারে প্রবেশাধিকার ও অর্থনৈতিক সংযুক্তি বাড়ানো।’