সিরাজগঞ্জে এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলায় বর্তমানে ২৫৫ জন এইচআইভি পজিটিভ রোগী শনাক্ত হয়েছে, এর মধ্যে বেশিরভাগই মাদকসেবী। পরীক্ষা শুরু থেকে এ পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা বেশ দুশ্চিন্তার বিষয়। জেলার চিকিৎসক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে এই নিয়ে গভীর হতাশা ও উদ্বেগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকালে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের এইচআইভি সেন্টারের সূত্রে এই তথ্য জানা যায়। ২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে জেলার জন্য এইচআইভি পরীক্ষা শুরু হয়। তবে এ বছরের প্রথম ছয় মাসে এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশ দ্রুতগতিতে বেড়ে গেছে।
জেলাবাসীর মধ্যে এইচআইভি ভাইরাসের সংক্রমণের মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, অবৈধ ইনজেকশন বা নেশার মাধ্যমে এই রোগের প্রভাব দ্রুত বিস্তার লাভ করছে। বিশেষ করে ভারত থেকে অবৈধভাবে আসা নিষিদ্ধ ইনজেকশন ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধের পাশাপাশি মনোযোগী কনসেলিং করা হচ্ছে।
তথ্য অনুযায়ী, ২৫৫ জনের মধ্যে ১৮৭ জন মাদকসেবী, ৩৫ জন সাধারণ রোগী, ২9 জন স্কুল-কলেজ পড়ুয়া এবং চারজন যৌনকর্মী। আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রথম টেস্টে পজিটিভ ফল এলে তাদেরকে সেন্টারে আনার জন্য বলা হয় এবং পুনরায় ভেরিফিকেশনের জন্য রি-টেস্ট করা হয়। এ পর্যন্ত এইচআইভি পজিটিভ এই রোগীর মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যরা নিয়মিত ওষুধের মাধ্যমে সুস্থ হয়ে উঠছেন।
সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আকিকুন নাহার বলেন, সমাজের নিম্নআয়ের মানুষজনই মূলত এই ইনজেকশন শেয়ার করে বেশি ব্যবহার করছে, ফলে সংক্রমণ দ্রুত ছড়াচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আক্রান্তদের চিকিৎসার পাশাপাশি মনোবল বাড়াতে কনসেলিং কার্যক্রম চালানো হচ্ছে এবং ড্রাগ ব্যবহার কমাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান।
অপরদিকে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, অবৈধ ইনজেকশন বেচাকেনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক দুই বছরে জেলাজুড়ে পরিচালিত অভিযানে প্রায় ১৯০০ অ্যাম্পুল ইনজেকশন ড্রাগ জব্দ করা হয়েছে। অব্যাহত এই অভিযানগুলো ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে।






