ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) সোমবার একটি গুরুত্বপূর্ণ গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে যেখানে বক্তারা উল্লেখ করেন, পরিবর্তনশীল তথ্যপ্রযুক্তির কারণে বর্তমান অর্থনৈতিক কার্যক্রমে দ্রুত পরিবর্তন আসছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হলে বাংলাদেশকে অধিক মনোযোগী হয়ে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির দিকে নজর দিতে হবে।
আলোচনায় আরও বলা হয়, দেশের শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকায়ন, কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষার সম্প্রসারণ, বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জগুলো সামলে নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ চালু করা, সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন এবং শিক্ষা ও শিল্পক্ষেত্রের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের ওপর জোর দেওয়া হয়। এই সব বিষয়ই বর্তমান ও ভবিষ্যতের কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান অতিথি হিসেবে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন অধিদপ্তরের (এনএসডিএ) নির্বাহী চেয়্যারম্যান ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরী। তিনি বলেন, সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় সমস্যা রয়েছে, এবং মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়নে সচেতনতার অভাব দেখা যাচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, এনএসডিএ নিজের কাঠামো দিয়ে কাজ করছে, বিশেষ করে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।
ড. নাজনীন আরও জানান, জাপানে ১ লাখ দক্ষ বাংলাদেশি প্রেরণের লক্ষ্যে জাপানি ভাষা শেখানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি নারীদের দক্ষতা বৃদ্ধির উপরও গুরুত্ব দেন এবং মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর প্রস্তাবও করেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ড. এম নিয়াজ আসাদুল্লাহ, যুক্তরাজ্যের রিডিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতি পরিস্থিতিকে দ্রুত পরিবর্তন করছে। ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের পোশাক, খাদ্য ও কৃষি, গৃহ নির্মাণ, পর্যটন ও হসপিটালিটি খাতে প্রায় ৫৩ লাখের বেশি চাকরি হারানোর আশঙ্কা রয়েছে। ফলে, দেশের মানবসম্পদকে প্রযুক্তিগত কাজে প্রশিক্ষিত করে আরও দক্ষ করে তোলার ওপর গুরুত্ব জোর দেন তিনি।
এছাড়া, অনুষ্ঠানে মোহাম্মদ সাইফুল হাসান, আলী আমিন জুনিয়রসহ বিভিন্ন অঞ্চলের কর্মকর্তা, একাডেমিক ও শিল্প অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ অংশ নেন। তারা বলেন, শিক্ষা ও শিল্পের সমন্বয় ছাড়া এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সম্ভব নয়। তারা উল্লেখ করেন, শিক্ষকতা থেকে শুরু করে শিক্ষার মান উন্নয়ন, দক্ষতা প্রশিক্ষণের বাজেট বৃদ্ধি এবং পরিকল্পনা সংশোধনের ওপর জোর দেওয়া জরুরি।
সার্বিকভাবে, বক্তারা মত প্রকাশ করেন যে, আধুনিক প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা আরও আধুনিক ও যুগোপযোগী করতে হবে। সকল স্তরের শিক্ষার মান নিশ্চিত করে দেশের শিল্প ও অর্থনীতি আরও শক্তিশালী করার জন্য এই কার্যক্রমগুলো প্রয়োজন। এভাবে দেশের মানবসম্পদকে উন্নত করে বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতামূলক করে তোলা সম্ভব বলে তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।






