ফিলিস্তিনিদের মাধ্যমে গাজা উপত্যকার নিরাপত্তা নিশ্চিত ও প্রশাসন গঠনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এক উদ্যোগের অংশ হিসেবে ছয়টি মুসলিম দেশ একটি বৈঠকে বসতে যাচ্ছে। এই বৈঠকের আয়োজন করে তুরস্ক। রোববার, বার্তাসংস্থা রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ পাওয়া গেছে।
এক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান সোমবার ইস্তাম্বুলে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে গাজার নিরাপত্তা ও প্রশাসন দ্রুত ফিলিস্তিনিদের হাতে হস্তান্তরের জন্য আহ্বান জানাবেন। এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্র কর্মকর্তারা।
সূত্রটি আরও জানায়, ফিদান এই বৈঠকে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সমন্বিত পদক্ষেপের গুরুত্ব তুলে ধরবেন, যাতে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়। এর আগে, সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ সভার ফাঁকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গাজার যুদ্ধবিরতি বিষয়ক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে হামাসের নিরস্ত্রীকরণ ও ইসরায়েলের গাজা থেকে প্রত্যাহারের সময়সূচি নিয়ে আলোচনা হয়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মার্কিন মধ্যস্থতায় গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও, হামাসের নিরস্ত্রীকরণ ও প্রত্যাহারের নির্দিষ্ট সময় এখনও নিশ্চিত না হওয়ায়, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরও প্রায়ই সহিংসতা ফিরে আসছে।
ফিদান এই বৈঠকে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি ভাঙার অজুহাত তৈরির বিষয়গুলো তুলে ধরবেন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ইসরায়েলের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানাবেন। সেইসঙ্গে, গাজায় প্রবেশে মানবিক সহযোগিতার পরিমাণ কম থাকায়, ইসরায়েল এই ব্যাপারে দায়িত্ব পালন না করার বিষয়টিও আলোচনায় থাকবে।
আন্তর্জাতিক স্তরে গাজার পুনর্বাসন ও নতুন গাজা তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা চলছে, যেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন কয়েকটি উপসাগরীয় দেশের দাতাদের কাছে প্রস্তাব পেশ করেছে। এই প্রস্তাব অনুযায়ী, গাজার পূর্ব অংশে প্রয়োজনীয় অর্ধ ডজন আবাসিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে, যা এখন ‘নিউ গাজা’ নামে পরিচিত।
এই প্রকল্পটি ‘ইয়োলো লাইন’ নামে একটি নতুন সীমারেখার পাশে নির্মাণ করা হবে, যেখানে ইসরায়েলি সেনারা হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর থেকে অর্ধেকের বেশি গাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। মার্কিন পরিকল্পনায়, ইসরায়েল ধীরে ধীরে গাজার অন্যান্য অংশে সরে যাবে এবং এর বাইরে থাকবে। তবে এর জন্য দুটি শর্ত পূরণ জরুরি—এক, আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী গঠন, যা নিরাপত্তা রক্ষা করবে; দুই, হামাসের নিরস্ত্রীকরণ, যা হামাস এখনও বাস্তবায়নে আগ্রহ দেখায়নি।
অতএব, এই শর্তগুলো সম্পন্ন না হওয়ায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পুনর্গঠন কার্যক্রম দ্রুত শুরু করার পরিকল্পনা করছে।






