প্রায় এক যুগ ধরে রাশিয়া চেষ্টা করছে নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের জন্য। সম্প্রতি তারা দুটি সফল পরমাণু অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে। এই পরীক্ষাগুলোর সঙ্গে পর্যায়ক্রমে এখন জল্পনা শুরু হয়েছে, কেন এই সময় রাশিয়া এত বড় অস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে? এর পিছনে কি কোনো শক্তিশালী বার্তা লুকানো রয়েছে? বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এর মূল লক্ষ্য হলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি ইঙ্গিত দেওয়া। কারণ একদিকে রাশিয়া তাদের সামরিক ক্ষমতা দেখাতে চাইছে, অন্যদিকে তারা চাচ্ছে ট্রাম্পকে যেন অপ্রস্তুত করা হয়। ট্রাম্প এখনও এই পরীক্ষার ব্যাপারে স্পষ্ট কোনো মন্তব্য করেননি, তবে সম্প্রতি পেন্টাগন টমাহক লং রেঞ্জ ক্ষেপণাস্ত্রের ছাড়পত্র দিয়েছে, যা ইউক্রেনকে সরবরাহের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই অস্ত্র হাতে পেলে ইউক্রেনের জন্য যুদ্ধ আরও সহজ এবং ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠবে বলে ধারণা করছে পশ্চিমা বিশ্লেষকরা। অনেকের মতে, আমারিকাকে চাপ দিতে ট্রাম্পকে হয়তো এই পদক্ষেপের মাধ্যমে হস্তক্ষেপের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। অন্যদিকে, রাশিয়া নিজে বেশ কিছু নতুন পরমাণু অস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বুরেভেস্টনিক ক্ষেপণাস্ত্র, যা খুব কম উচ্চতায় উড়ে গিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে সক্ষম। এছাড়া পোসেইডন নামের ড্রোনও সফলভাবে পরীক্ষা হয়েছে, যা সমুদ্রের নিচ দিয়ে লক্ষ্যে পোঁছাতে পারে। পুতিন নিজে এই পরীক্ষাগুলোর ঘোষণা দিয়ে জানিয়েছে, এসব অস্ত্রের মাধ্যমে রাশিয়া পৃথিবীর শক্তিশালী পরমাণু ক্ষমতা প্রদর্শন করছে। এই পরীক্ষাগুলোর মাধ্যমে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি বার্তা পাঠাতে চাচ্ছে, যেন তারা নিজেদের ক্ষমতা আরেকবার উপলব্ধি করে। উপরন্তু, ক্রেমলিন বলছে, ইউক্রেনকে অস্ত্র দিলে আসলে কোনো লাভ হবে না এবং কোনমতো যুদ্ধের সমাধান হবে না। যদিও ট্রাম্প পরমাণু ও শান্তির ব্যাপারে নানা সময় নানা বক্তব্য দিয়েছেন, এর সত্যতা এখনও অজানা। ট্রাম্প দাবি করেছেন, তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সহজভাবে বন্ধ করতে পারেন। কিন্তু এখনো কোনো শান্তিপূর্ণ সমাধান পাননি। এর মধ্যে একাধিক আন্তর্জাতিক বৈঠক ও আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে, এমনকি হাঙ্গেরিতে পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের সাক্ষাতের সম্ভাবনাও বাতিল হয়ে গেছে। ট্রাম্প বলেন, যুদ্ধের বিষয়টি যদি কোনও ইতিবাচক প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে সমাধান হয়, তখনই তিনি পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। তা না হলে তিনি সময় ক্ষণ নষ্ট করবেন না। অন্যদিকে, পশ্চিমা দেশগুলি এখনও রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারী রেখেছে। এর মাঝেই রাশিয়ার পরমাণু পরীক্ষাগুলোর মাধ্যমে নতুন করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ঝড় তুলে দিয়েছে। এই সব কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক সভ্যতা ও যুদ্ধের পরিস্থিতিকে আরও অস্থির করে তুলছে।






