সরকার স্বাক্ষর করেছে ‘জাতীয় লজিস্টিকস নীতি-২০২৫’-এর অনুমোদনের জন্য। এই নীতিমালা বাংলাদেশের পরিবহন, সরবরাহ এবং বাণিজ্য ব্যবস্থাকে আধুনিক, দক্ষ এবং টেকসই করার জন্য প্রণীত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের ৪৭তম বৈঠকে এই নীতি অনুমোদন দেওয়া হয়। এই বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, একটি শক্তিশালী নীতিমালা থাকা মানে সরকার তার কাজগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হবে ও সঠিক দিকনির্দেশনা পাবে। এই নীতিমালা লজিস্টিক খাতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক-নির্দেশনামূলক টুল।
প্রেস সচিব আরও বলেন, এই নীতিমালার বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের বেসরকারি ও সরকারি খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে, দেশের বাইরে থেকে বিনিয়োগ আসবে এবং বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে প্রতিযোগিতা করার সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পাবে।
অতিরিক্ত তিনি জানাচ্ছেন, বর্তমানে দেশের প্রধান নৌবন্দর চট্টগ্রাম বন্দরে কখনো কখনো পণ্য রপ্তানিতে সময় লাগত ১১ দিন পর্যন্ত। এই লজিস্টিকস নীতিমালার কার্যকর বাস্তবায়ন হলে পণ্য পরিবহন ও প্রাপ্যতা আরও দ্রুত হবে এবং রপ্তানি প্রক্রিয়া সহজতর হবে।
প্রেস সচিব বলেছেন, ২০২৪ সালে এ ধরনের একটি নীতি প্রণয়নের চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে তা প্রত্যাশা অনুযায়ী সফল হয়নি। পরে জনপ্রশাসন সচিব এহসানুল হকের নেতৃত্বে একটি কমিটি পুনঃও খসড়া তৈরি করে।
নীতির মূল লক্ষ্য হলো, ২০৫০ সালের মধ্যে লজিস্টিকস খাতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে রেলওয়ে ও নৌপরিবহন খাতে। দেশের প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটার নৌপথের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি আরও জানান, এই নীতিমালায় সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) মডেলে বিনিয়োগের সুযোগ রাখা হয়েছে। এর মাধ্যমে লজিস্টিকস খাতকে একটি ডিজিটাল ইকোসিস্টেমে নেওয়া হবে, যেখানে শুল্ক, ফি ও কাগজপত্রসহ সব কার্যক্রম তাৎক্ষণিকভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, এই নীতির মূল উদ্দেশ্য হলো আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হওয়ার পর, বাংলাদেশ বিশ্ববাজারে বর্তমানে যে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পাচ্ছে, তা ধীরে ধীরে কমে আসবে। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের পণ্যের দাম বাড়বে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য রপ্তানি খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে এই নীতি গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করবে। সূত্র: বাসস






