বিলুপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সাবেক সদস্যরা আমদানি করা ৩১টি শুল্কমুক্ত বিলাসবহুল গাড়ি এখন থেকে সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরে হস্তান্তর করা হবে। এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কারণ চট্টগ্রাম বন্দরে গাড়িগুলো অপ্রয়োজনীয়ভাবে পড়ে থাকায় নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি ও বাজারমূল্য কমে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল।সরকারি সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বুধবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বিশেষ আদেশের মাধ্যমে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসকে গাড়িগুলো জনসাধারণের স্বার্থে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরে (ডিজিটি) হস্তান্তর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপকমিশনার এইচ এম কবির বলেন, এই পদক্ষেপের ফলে সরকারি গাড়ি কেনায় খরচ অনেকটা কমে আসবে, পাশাপাশি বন্দরে পড়ে থাকা বিলাসবহুল গাড়িগুলো নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি কমবে। কর্মকর্তাদের তথ্যানুযায়ী, গাড়িগুলো দীর্ঘদিন ধরে বন্দরে পড়ে থাকায় তাদের বাজারমূল্য অনেকটাই কমে গিয়েছিল। কয়েক মাস আগে গাড়িগুলোর নিলাম আয়োজন করেও কোনো ক্রেতা বেশি বিড করতে পারেনি। প্রতিটি গাড়ির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল প্রায় ৯ কোটি টাকা; তবে সর্বোচ্চ বিড ছিল শুধু ২ কোটি টাকার কাছাকাছি, ফলে নিলামের প্রক্রিয়া স্থগিত করতে হয়।পরবর্তীতে, এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে, এই গাড়িগুলো সরকারি পরিবহন পুলে হস্তান্তর করা হবে। অর্থ বিভাগও এই সুপারিশ অনুমোদন করে। এর ফলে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট থেকে সরকার মূলত এই গাড়িগুলোর খরচ চালাবে।এদিকে, এনবিআর বলেছে, সংসদ ভেঙে যাওয়ার পর সাবেক সংসদ সদস্যদের জন্য শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুবিধা আর দেওয়া হবে না। ফলে, এসব গাড়ি খালাস করতে হলে আমদানিকারকদেরকে ন্যুনতম ২৬৯ কোটি ৬২ লাখ টাকার শুল্ক ও কর পরিশোধ করতে হবে। প্রতিটির জন্য শুল্ক ও করের পরিমাণ ছিল ৮ কোটি ৬২ লাখ থেকে ৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকার মধ্যে। শুল্ক ও কর না পরিশোধের কারণে, ২০২৩ সালে আইন অনুযায়ী এই গাড়িগুলো নিলামে তোলা হয়েছিল। তবে ভবিষ্যতে, যদি সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকরা প্রয়োজনীয় শুল্ক ও কর পরিশোধ করতে প্রস্তুত হয়, তাহলে আইন অনুসারে গাড়িগুলো তাদের জন্য খালাস করা সম্ভব হবে। এই ক্ষেত্রে, সরকারি যানবাহন অধিদপ্তর গাড়িগুলো আবার কাস্টমসের কাছে ফিরিয়ে দেবে।১৯৮৭ সালে তৎকালীন এরশাদ সরকারের সময় । সংসদ সদস্যদের জন্য শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির এই সুবিধা দীর্ঘদিন ধরে সমালোচিত হয়ে আসছে। এনবিআরের হিসাব অনুসারে, গত ১৫ বছর ধরে এই সুবিধার কারণে সরকারের রাজস্ব লোকসান হয়েছে প্রায় ৫ হাজার ১৪৭ কোটি টাকার বেশি।






