দেশে কোনও রাজনৈতিক দল ভোটের মাধ্যমে নিজেদের অস্তিত্ব খুঁজে পাবে না বলেও মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ভোটের পদ্ধতি পরিবর্তনের জন্য বেশ কিছু দাবি উঠলেও আমরা তা গ্রহণ করব না। অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামী বলছে, পিআর পদ্ধতিতেই ভোট সুষ্ঠু হবে এবং তা না হলে ভোট হবে না। ফখরুল প্রশ্ন করেছেন, কেন মানুষ ভোটের ব্যাপারে এত ভয় পায়? কারণ তারা মনে করে, ভোট হলে তাদের অস্তিত্বই আর থাকবে না। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বড়গাঁও ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথাও বলেছেন তিনি।
বিএনপির মহাসচিব জামায়াতের সমালোচনা করে বলেন, তারা ইসলামের অপব্যাখ্যা দিচ্ছে। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, আমার কর্মই আমার বেহেশত হবে। আমি যদি মানুষকে ভালোবাসি, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি, রোজা রাখি, মিথ্যা না বলি, সুদ না নিই—এসবই আমাকে বেহেশত পর্যন্ত নিয়ে যাবে। কিন্তু জামায়াতের নেতারা কি শুধুমাত্র টিকেট কাটলেই বেহেশতে যেতে পারবে? যারা এসব মুনাফেকি করে, তাদের থেকে সবাই সতর্ক থাকুক।
এনসিপির ব্যাপারে মির্জা ফখরুল ঠাকুরগাঁওয়ের স্থানীয় ভাষায় বলেন, ওরা ভোট পাবেই না। এ জন্য ওরা জামায়াতের সঙ্গে সুর মিলিয়ে পিআর ব্যবস্থা চালু করতে চায়, সনদ বাস্তবায়ন করতে চায়; কিন্তু এ সবই কেবল বিভ্রান্তি ছড়ানোর কৌশল। ভোট পেছানোর জন্যই এই চক্রান্ত, পূর্বের ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার চেষ্টা। বিএনপি শুধুমাত্র সিদ্ধান্তে ঐকমত্যের বাইরে গেলে অন্য কোনও দায় নেয় না, বরং এই দায় সরকারের ওপরে বর্তায়।
শিক্ষা বিষয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিশুদের সুস্থভাবে বিকাশের জন্য শারীরিক শিক্ষা অপরিহার্য। সংস্কৃতিক গাইতে শেখানোরও কোনও অসুবিধা নেই। বরং তারা ভালো কিছু শিখতে পারছে।
আর দেশের স্বাভাবিক নির্বাচন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হলে দেশের আরেকটু ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, দেশের পরিস্থিতি সব সময় আমাদের পক্ষেও আসে না। এখনও সুযোগ এসেছে, সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে একটি সুষ্ঠু সরকার গঠন প্রয়োজন।
অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের লকডাউন কর্মসূচির সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, শেখ হাসিনা দিল্লিতে গিয়ে হরতাল ঘোষণা করে এসেছে। ঢাকায় কিছু গাড়ি পুড়িয়ে দেশের সম্পদ নষ্টের মতো ঘটনা ঘটেছে। প্রশ্ন হলো, যারা এই ধরনের অপরাধ করবে, তারা কি এই দেশে থাকতে পারবে? সাহস থাকলে এসে দেশের জনগণের সম্মুখীন হোক। দিল্লিতে বসে দেশের ক্ষতি করবেন না।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমিন, সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন, বড়গাঁও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আহম্মদ আলীসহ জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।






