জুলাইয়ে সরকারের অভ্যুত্থানে ক্ষমতা থেকে সরানো হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। তার বিরুদ্ধে, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায় প্রদান প্রক্রিয়া এখন শুরুর পথে। ইতোমধ্যে এই মামলার আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্ট সবাই ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়েছেন, যেখানে রায়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে আদালত।
সোমবার সকাল ১১টায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় কার্যকর করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। এই ট্রাইব্যুনালের অন্যান্য বিচারপতিদের মধ্যে রয়েছেন, বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
মামলায় অভিযুক্ত তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনেন প্রসিকিউশন। অভিযোগপত্রে মোট ৮৭৪৭ পৃষ্ঠা ধারণ করা হয়েছে, যার মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠা, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠা এবং শহীদদের তালিকা ও বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠা।
তদন্ত প্রতিবেদনের মূল ভিত্তিতে বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে আন্দোলনের সময়, শেখ হাসিনা সরাসরি বিক্ষোভকারীদের দমন-পীড়নের জন্য আদেশ দিয়েছিলেন। এর ফলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক গণহত্যা, খুন, নির্যাতন চালানো হয়, যা মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, হাসিনা তার দল — আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহায়তায় সশস্ত্র ক্যাডারদের মাধ্যমে বিক্ষোভকারীদের ওপর দমন-পীড়ন চালানোর নির্দেশ দেন। এর ফলে দেড় হাজারের বেশি মানুষ নিহত ও ২৫ হাজারের বেশি আহত হন; গুরুতর আঘাত এবং অঙ্গহানি ঘটেছে।
বিশেষ করে, ৫ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ পরিবর্তনকারী কর্মসূচির সময় আশুলিয়ায় আন্দোলনকারীদের গুলি করে হত্যা ও লাশ পুড়ানোর ঘটনায় শেখ হাসিনা ও আরও দুই আসামিকে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে এক ঘটনায়, গুলিতে আহত একজন ব্যক্তি জীবন্ত অবস্থায় পুড়িয়ে ফেলার নিষেধাজ্ঞা দেন। এই ঘটনাগুলোর জন্য তিনি এবং তার সহযোগীরা জড়িত বলে অভিযোগ তুলেছে।






