বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, শেখ হাসিনা ও আরও দুইজনের বিরুদ্ধে যে মামলার রায় হয়েছে, তা দেশের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তিনি বলেন, এই রায় অবশ্য অপরাধের সম্পূর্ণ বিচার নয়, তবে এটি ভবিষ্যতের জন্য একটি শিক্ষণীয় দৃষ্টান্ত। এর মাধ্যমে অজেয়ফ্যাসিবাদী শাসন এবং একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে সতর্কতা সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরও যোগ করেন, এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জনগণের জন্য বিচারবিচার প্রতিষ্ঠার পথে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
সোমবার রায় ঘোষণা পরে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এই রায় দিয়ে স্পষ্ট হয়, ফ্যাসিস্ট বা স্বৈরাচার যাই শক্তিশালী হোক না কেন, তাদের একদিন না একদিন আদালত কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। তিনি উল্লেখ করেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গুম, খুন, অপশাসন ও বৈষম্যের ফলে দীর্ঘদিন以来 দেশটি পীড়িত হয়েছে, যা শেষ করে নতুন এক যুগের সূচনা সম্ভব। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, দেশের এগিয়ে চলা এবং গণতন্ত্রের বিকাশের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আমরা বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও ভারসাম্যপূর্ণ শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা জানি, এর মাধ্যমে একটি সুসংগঠিত ও উন্নত রাষ্ট্র গড়ে উঠবে। তিনি আবারও ঘোষণা করেন আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে, কারণ এটি দেশের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ অর্জন।
তিনি আরও বলেন, ভোটের জন্য সাধারণ মানুষের উচ্ছ্বাস ও প্রত্যাশা বছর বছরের বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, বিগত বছরগুলোতে বিএনপি একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে এসেছে। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এমন একটি দেশ ও জাতি গঠন, যেখানে ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরশাসনের আর উত্থান হবে না। এজন্য, স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ ও নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা অপরিহার্য।
সালাহউদ্দিন অভিযোগ করেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশের কিছু বুদ্ধিজীবী, লেখক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ভারতে সুবর্ন স্বার্থ ও আধিপত্য প্রতিষ্ঠার পক্ষে ভূমিকা রাখছিলেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার ও ভিনদেশি সমর্থনে বাংলার বুদ্ধিজীবী সমাজ বিগত কয়েক দশকে দুর্নাম ও দুর্বৃত্তায়নে আক্রান্ত হয়েছে। তিনি অভিজ্ঞতা প্রকাশ করেন, সমসাময়িক শিক্ষাব্যবস্থা ও বুদ্ধিজীবী পরিস্থিতির সঙ্গে ব্রিটিশ শাসনামলের তুলনা করে, বোঝানো হয় যে, সেই সময়ে নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্রিটিশরা শিক্ষিত সমাজকে ব্যবহার করতেন, ঠিক যেমনটি বিগত দিনগুলোতে কিছু মিডিয়া ও বুদ্ধিজীবী দেশের জন্য হেজিমনি বজায় রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন।
আর ভবিষ্যতের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, আধুনিক বৈশ্বিক চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রজন্ম গড়ে তুলতে হবে, যেখানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, রোবোটিক্স, ডেটা সায়েন্স ও বায়োটেকনোলজির মতো ক্ষেত্রগুলো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। তিনি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে ভোকেশনাল শিক্ষা এবং উচ্চশিক্ষায় গবেষণা ও উদ্ভাবনের ওপর জোর দেন।
জুলাইয়ে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বিষয়ে তিনি বলেন, এটির মাধ্যমে অনৈক্য সৃষ্টি চেষ্টা করা হয়েছিল, যা এই প্রতিবেদনে মনে হয় অপ্রয়োজনীয়। তিনি বলেন, দেশের সার্বভৌমত্বের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের চাপে বা নির্দেশে বাধ্য হওয়া যাবে না। তিনি আশা প্রকাশ করেন, দেশের ভবিষ্যত উন্নয়নের জন্য আমরা একসাথে কাজ করব ও শক্তিশালী করবো।






