আগামী ২১ নভেম্বর থাইল্যান্ডের কেন্দ্রীয় শহর পাক ক্রেটে অনুষ্ঠিত হবে ‘মিস ইউনিভার্স’-এর ৭৪তম আসরের গ্র্যান্ড ফাইনাল। বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ এই সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছেন ১২১ দেশের প্রতিযোগীরা। আয়োজনের সর্বস্তরে চলেছে নানা ধরনের কার্যক্রম ও নির্বাচন প্রক্রিয়া। বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন মডেল ও অভিনেত্রী তানজিয়া জামান মিথিলা, যারা প্রতিযোগিতার বিভিন্ন বিভাগে ভোটিংও চালিয়ে যাচ্ছেন।
মিথিলা দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও সাম্প্রদায়িকতা তুলে ধরার জন্য এ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী পোশাক — জামদানি শাড়ি বেছে নিয়েছেন। তাঁর পরা এই জাতীয় পোশাক বাংলার সমৃদ্ধ রাজকীয় ঐতিহ্যকে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরছে। সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে মিথিলা লিখেছেন, ‘আমার পোষাকটির মধ্যে রয়েছে বাংলার রাজসিক জামদানি শাড়ি, যা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জীবন্ত চিত্র।’
তিনি আরো বলেছেন, ‘জামদানি হলো একটি এমন কাপড়, যার প্রতিটি সূতা হাতে আঁকা, শিল্পকলা, নিষ্ঠা ও চিরন্তন রুচির নিদর্শন। এটি সম্পূর্ণ হাতে তৈরি এবং বুনতে সময় লেগেছে প্রায় ১২০ দিন। এই বিশেষ শাড়ির ডিজাইনার হলেন আফ্রিনা সাদিয়া সৈয়দা।’
মিথিলার পরা জামদানি শাড়িতে ফুটে উঠেছে স্নিগ্ধ শাপলা ফুলের মোটিফ। বাংলাদেশের জাতীয় ফুল শাপলার সৌন্দর্য এই পোশাকে যেমন চকচক করছে, তেমনি তার গহনা মাঝেও শোভা পাচ্ছে এই ফুলের নকশা। ৬ ইয়ার্ড লম্বা এই শাড়ির ডিজাইন করেছেন লরা খান।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে ইউনেস্কো এই প্রাচীন পদচারণাপূর্ণ শিল্পকলা ও কারুশিল্পকে মানবতার এক অমূল্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। জামদানির ইতিহাস ১৭ শতকের মোগল যুগে শুরু হওয়া এই তৈয়ার মধ্য দিয়ে আসছে। সেই সময় থেকে এগুলি ছিল রাজপরিবার ও অভিজাতদের ঐক্যবদ্ধ পোশাক।
শিল্পের ক্রমবিকাশে এই পোশাকটি হাতে বোনা, সুতির নির্বাচনে প্রতিটি সূতোতে রয়েছে শিল্পের নৈপুণ্য। এটি সৌন্দর্য, ঐতিহ্য এবং স্থিতিস্থাপকতার এক জীবন্ত প্রমাণ। নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর তীরবর্তী তাঁতশিল্পীরা এই শাড়ি নিপুণভাবে বয়েছেন।
বিশেষ করে উল্লেখ্য, ‘মিস ইউনিভার্স ২০২৫’-এর মুকুট জেতার লক্ষ্য নিয়ে ২ নভেম্বর বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ডে পৌঁছেছেন ‘মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ ২০২৫’ নির্বাচিত তানজিয়া জামান মিথিলা। দেশের পতাকা উড়িয়ে মুকুট জয়ের জন্য তিনি একের পর এক ধাপ পার হচ্ছেন এবং তাঁর প্রত্যাশা, সফল হবেন এবং বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সুন্দরীর মর্যাদা পাবেন।






