চট্টগ্রামের জাহাজ রপ্তানিতে আবার নতুন গতিশীলতা ফিরে এসেছে। পটিয়া ভিত্তিক জাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেড সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতে তিনটি ল্যান্ডিং ক্রাফট জাহাজ রপ্তানি করেছে। এই ঘটনা বৃহস্পতিবার দুপুরে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। জানা যায়, তিনটি জাহাজের নাম হলো মায়া, এমি ও মুনা। এগুলোর দৈর্ঘ্য ৬৯ মিটার, প্রস্থ ১৬ মিটার এবং ড্রাফট ৩ মিটার। আন্তর্জাতিক ক্লাসিফিকেশন সোসাইটি বুরো ভেরিতাসের মানদণ্ডে নির্মিত এই জাহাজগুলো ১০ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলতে পারদর্শী। এদের ক্লিয়ার ডেকের আকার প্রায় ৭০০ বর্গমিটার, যা ভারি যন্ত্রপাতি ও বাল্ক কার্গো পরিবহনের জন্য আদর্শ। জাহাজগুলিতে রয়েছে দুটি ইয়ানমার মূল ইঞ্জিন, ইলেকট্রো-হাইড্রোলিক র্যাম্প উইঞ্চ, ২৪ মিলিমিটার স্টিল ওয়্যার রোপ, উন্নত অ্যাঙ্করিং ব্যবস্থা এবং হাইড্রোলিক স্টিয়ারিং। নেভিগেশনের জন্য ইনস্টল করা হয়েছে সিমরাড এস৩০০৯ ইকো সাউন্ডার, ফুরুনো জিপি-৩৯ জিপিএস, নেভিট্রন এনটি-৮৮৮৬ অটোপাইলট, রাডার ও আধুনিক যোগাযোগ সরঞ্জাম। এ বছর ওয়েস্টার্ন মেরিন ইতিমধ্যে ছয়টি জাহাজ সংযুক্ত আরব আমিরাতে রপ্তানি করেছে। এর আগে বছরে শুরুর দিকে ‘রায়ান’ নামের একটি ল্যান্ডিং ক্রাফট এবং জুলাই মাসে ‘খালিদ’ ও ‘ঘায়া’ নামে দুটি টাগবোট রপ্তানি করার ঘটনা ঘটে। এই নিয়মিত রপ্তানি কার্যক্রমের মাধ্যমে ওয়েস্টার্ন মেরিন এখন পর্যন্ত ৩৬টি বিভিন্ন ধরনের জাহাজ ১১টি দেশে রফতানি করেছে, যার বাজারমূল্য অন্য দেশের বিনিময়ে ১৩৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রথম জাহাজ রপ্তানি করেন ২০১৭ সালে। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আলী আল হমোদি বলেন, দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক এই বাণিজ্যিক সহযোগিতা আরও দৃঢ় করবে এবং ভবিষ্যতে আরো জাহাজের রপ্তানি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) প্রশাসক আবদুর রহিম খান ও ওয়েস্টার্ন মেরিনের শীর্ষ কর্মকর্তারা। ওয়েস্টার্ন মেরিনের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, জাহাজ নির্মাণ একটি শ্রমঘন ও উচ্চ প্রযুক্তির শিল্প। জাহাজ রপ্তানির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন সোহেল হাসান জানান, এই শিল্পের বিকাশের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পুঁজি প্রয়োজন। পর্যাপ্ত পুঁজি থাকলে বিশ্ব বাজারের চাহিদা পূরণে এবং দেশের রপ্তানি বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে জাহাজ নির্মাণ শিল্প।






