ওয়াশিংটনের হোয়াইট হাউসে শুক্রবার অনুষ্ঠিত হলো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নিউইয়র্কের নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি এর প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক। দীর্ঘদিনের মতবিরোধের কারণে এই সাক্ষাৎকে ঘিরে শুধু আমেরিকা নয়, আন্তর্জাতিক মহলেও ব্যাপক কৌতূহল ছিল। অনেক বিশ্লেষক ধারণা করছিলেন, এই বৈঠক কি সম্পর্কের দূরত্ব কমিয়ে আনবেন, নাকি পুরোনো তিক্ততা থেকেই যাবে। তবে আশা করা যায়, এই প্রথম সরাসরি সাক্ষাতের মাধ্যমে দুই নেতার সম্পর্ক অনেকটাই বদলে গেছে। তারা ছিলেন হাস্যোজ্জ্বল এবং একে অপরের প্রশংসায় মগ্ন। তাদের শরীরী ভাষাও এর সাক্ষ্য দেয়। নিউইয়র্কের অপরাধ দমন ও জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন তারা। বৈঠকের পরে প্রকাশ পেয়েছে, পরিবেশ ছিল উষ্ণ ও আন্তরিক। শুরুতেই দুজন হাসিমাখা মুখে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। পুরো আলোচনা চলাকালে ট্রাম্প বেশ আন্তরিক ছিলেন, মামদানিও আত্মবিশ্বাসী ও শান্ত ছিলেন। তরুণ এই মেয়র, যিনি অল্প বয়সে নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচিত হন, তিনি অভিবাসী পরিবারের সন্তান হয়েও মার্কিন রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসেন। তার নেতৃত্বে শহরের রাজনীতি ও প্রশাসনে নতুন দৃষ্টিভঙ্গির আশা করে অনেক ভোটার। ট্রাম্পের সঙ্গে তার এই সাক্ষাৎ আরও স্পষ্ট করে দেয়, তিনি জাতীয় পর্যায়ে নিজের অবস্থান শক্ত করতে আগ্রহী। বৈঠকের সময় ট্রাম্পকে শান্ত ও মনোযোগী দেখা যায়, তিনি বেশ কয়েকবার মামদানির প্রতি উৎসাহ প্রকাশ করেন, তাকে আলতো করে হাত চাপড়ে দেন, যা সমর্থন ও শুভকামনার প্রকাশ। সাংবাদিক সম্মেলনে দাঁড়িয়ে তারা একে অন্যের সঙ্গে খুব আন্তরিকতা দেখান, রসিকতার ছলে ট্রাম্প মামদানির বাহুতে হালকা ঘুষিও মারেন, যা তাদের স্নেহপূর্ণ সম্পর্কের ইঙ্গিত। এই দৃশ্য অনেকের নজর কেড়ে নেয় কারণ এর মাধ্যমে স্পষ্ট হয় যে, দুই নেতা আগের মতবিরোধ পেছনে ফেলে নতুন করে একসূত্রে আসতে চান। ওভাল অফিসে বৈঠকের সময় ট্রাম্প তার ডেস্কে বসেছিলেন, পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন মামদানির দু হাত জোড় করে। দৃশ্যটি ছিল অভিজ্ঞ রাজনীতিকের পাশে দাঁড়িয়ে তরুণ নেতার প্রতীকী অবস্থান। ট্রাম্পের লাল চওড়া টাই এবং মামদানির নীল সরু টাই দুটি দলের প্রতিনিধিত্ব করে, তবুও তারা সহযোগিতার মনোভাব প্রকাশ করেন। বৈঠকের আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, আলোচনার পরিবেশ খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ হবে। শেষ দিকে তিনি বলেন, মামদানির ভালো কাজে আমি খুশি হব। এই মন্তব্য অনেক বিশ্লেষককে নতুন রাজনৈতিক পরিবর্তনের দিকে ইঙ্গিত করে। বৈঠক শেষে ট্রাম্প বলেছেন, আমি প্রত্যাশার চেয়েও বেশি বিষয় নিয়ে একমত হয়েছি, বিশেষ করে আমাদের শহরটা ভালো থাকুক। অন্যদিকে, মামদানিও জানিয়েছেন, তিনি নিউইয়র্কের স্বার্থে প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চান। এই দুই রাজনৈতিক বিরোধী নেতার মধ্যে এমন ইতিবাচক বৈঠক যুক্তরাষ্ট্রের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন বার্তা দেয়। যদিও এটি পারস্পরিক সম্পর্কের সম্পূর্ণ পরিবর্তনের সূচনা বলে না, তবে সুন্দর আলোচনায় দেখা গেল, তারা সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী।






