ভোলার বোরহানউদ্দিনে নার্স ও মিডওয়াইফারি পরিষেবার উন্নয়ন ও শিক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) তাদের ৮ দফা দাবি স্পষ্ট তুলে ধরার জন্য স্মারক লিপি প্রদান করেছে। গত সোমবার (২৪ নভেম্বর) সকাল ১১ টায় বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত নার্সিং স্টাফরা এই স্মারকলিপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে পৌঁছে দেন। প্রতিনিধিদল উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা রনজিৎ চন্দ্র দাসের কাছে এই দাবি সংবলিত স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নার্সিং সুপারভাইজার তৃপ্তি রায়, সিনিয়র স্টাফ নার্স রুমা আক্তার, আবুল কালাম আজাদ, আশা মনি, শাবনূর ও রিনা রায়। তারা জানায়, জনবান্ধব নার্সিং ও মিডওয়াইফারি পরিষেবা ও শিক্ষার মানোন্নয়নে ৮ দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য তারা ঢাকায় এক মহাসমাবেশের পর ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। যদি এই দাবিগুলি সাময়িক সময়ে পূরণ না হয়, তবে ৩০ নভেম্বর কালো ব্যাজ ধারণ করে প্রতীকী শাট-ডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। পাশাপাশি, আগামী ২ ডিসেম্বর থেকে দেশের সকল স্বাস্থ্যসেবা, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ব্যাপক বিপর্যয়মূলক শাট-ডাউন আনার পরিকল্পনা রয়েছে। নার্সিং ও মিডওয়াইফারি বিভাগকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে চলা নানা অপ্রত্যাশিত পরিবর্তনের ইচ্ছাকৃত চেষ্টাগুলোর বিরুদ্ধে তারা আপত্তি প্রকাশ করেছেন। ৪৮ বছর ধরে স্বতন্ত্র নার্সিং প্রশাসন হিসেবে পরিচিত এই বিভাগের বিলুপ্তির অপচেষ্টাগুলো বন্ধের দাবি জানানো হয়। দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য, স্বতন্ত্র নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরকে ভিন্ন বিভাগে রূপান্তর না করে, নতুন নারীকার্য অধিদপ্তর গঠন ও নার্সিং ক্যারিয়ারে সংশ্লিষ্ট নীতি দ্রুত বাস্তবায়ন, উচ্চতর পদোন্নতির জন্য পদ দুটি (৯ম গ্রেড) উন্নীত করা, ডিপ্লোমা নার্স-মিডওয়াইফরা স্নাতক সমমানের স্বীকৃতি পাওয়া, দেশের স্বাস্থ্য ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নার্স নিয়োগের স্বচ্ছ নিয়োগনীতি প্রণয়ন, অপ্রশিক্ষিত ও অবৈধ নার্স ও মিডওয়াইফদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে। তারা আরও বলেন, ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই স্বতন্ত্র নার্সিং প্রশাসন, যা বর্তমানে ‘নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর’ নামে পরিচিত, সেটি জনকল্যাণমূলক নার্সিং ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা ও প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। দীর্ঘ ৪৮ বছর ধরে নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও এই বিভাগের স্বতন্ত্রতা রক্ষা ও উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে তারা অঙ্গীকারবদ্ধ। তবে বর্তমান সরকারের আশ্বাসের পরও কর্মকর্তাদের লসক পলিসির কারণে এই দাবিগুলোর দ্রুত বাস্তবায়ন এখন দেরিতে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দের তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়। তারা জানান, অতীতের সব অপচেষ্টা রুখে এই স্বতন্ত্র প্রশাসনকে অটুট রাখতে তারা কঠোর পদক্ষেপ নেবে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সারাদেশব্যাপী কঠোর আন্দোলন সংগ্রাম ও দাবি আদায়ের জন্য শক্তিশালী কর্মসূচি ঘোষণা। এবারের লক্ষ্য, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি উন্নয়ন ও নিরাপত্তার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের একযোগে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া।






