প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে পূর্বাচলে নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে নানা অসঙ্গতি ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ঢাকা বিশেষ জজ-৫ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন বৃহস্পতিবার বলেন, শেখ হাসিনা নিয়মবহির্ভূতভাবে তার ও পরিবারের সদস্যের নামেও প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সম্পদের প্রতি লোভ ছিলো প্রবল। তিনি নিজে প্লট নিতে চাইলে, তা না হলেও আবেদন না করেও প্লটের দখল বুঝে নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। এর মধ্যে শেখ হাসিনা নিজে, তার ছেলে ও মেয়ে, পাশাপাশি তার বোন শেখ রেহানা, তার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের নামেও প্লট বরাদ্দ হয়। এতে বোঝা যায়, জনগণের সম্পত্তির প্রতি তার লোভ ছিলো অপ্রতিরোধ্য। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চারবার সরকার পরিচালনার পরও তিনি জনগণের সম্পদ থেকে লোভ কমাতে পারেননি, এমনটাই একজনের মত প্রকাশ।
বিচারক আরো জানান, বিভিন্ন দুর্নীতির মামলায় শেখ হাসিনার পাশে তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামেও বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে এবং তাদেরকে ৫ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। গত বছর ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা ও তার সন্তানদের বিরুদ্ধে মামলা চলতি সময়ে, তিনি পলাতক আছেন। মামলা চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন মিডিয়া রিপোর্টের মাধ্যমে এই দুর্নীতির তথ্য উঠে আসে, যেখানে দেখা যায়, মিডিয়া যেন দুর্নীতির সত্যতা প্রকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
আদালত উল্লেখ করেন, প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে বিভ্রান্তি মূলত দুই ধরনের ক্যাটাগরিতে দেওয়া হয়—জেনারেল ও স্পেশাল। এই মামলায় স্পেশাল ক্যাটাগরির বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। পাশাপাশি, আদালত জানায়, ২০২২ সালের ১৮ জুলাই তৎকালীন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ উদ্দিন আহমেদ আইন ভঙ্গ করে শেখ হাসিনার জন্য প্লট বরাদ্দের অনুমোদন দেন। গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা পরবর্তীতে সুপারিশপত্র পাঠিয়ে অনুমোদন করেন। এই অনুমোদনপ্রক্রিয়াটি নিয়মের বাইরে গিয়ে দেয়া হয়, যা আদালত নিশ্চিত করেছে।
বিচারক বলেন, অবৈধভাবে অনুমোদনের এই প্রক্রিয়ায় দেখা যায়, কোন আবেদন ছাড়াই প্লট বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা আইন লঙ্ঘন। এমনকি, নিয়ামক নিয়ম লঙ্ঘন করে ২৭ জুলাই রাজউক থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য প্লটের পত্রও ইস্যু করা হয়। আদালত এই বিষয়টির গভীর তদন্ত করে দেখেছে এবং বলেছে, এই দুর্নীতির মাধ্যমে জনগণের সম্পদ লুটের অপচেষ্টা হয়েছে।






