২০২৬ সালে জাতিসংঘের বার্ষিক বাজেট ১৫.১ শতাংশ কমানোর পরিকল্পনা করেছে সংস্থাটি, এবং একই সঙ্গেপ্রায় ১৮.৮ শতাংশ কর্মীকে ছাঁটাই করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণের পেছনে মূল কারণ হলো দাতা দেশগুলো থেকে পাওনা অর্থ পরিশোধে অস্বীকৃতি এবং বকেয়া পরিমাণ ১ দশমিক ৫৯ ট্রিলিয়ন ডলার অতিক্রম করা। এই পরিস্থিতিতে বিশ্বায় সংস্থাটির জন্য নতুন করে বাজেট কাটছাঁট করা বাধ্যতামূলক হয়ে পড়েছে।
গত সোমবার, মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ২০২৬ সালের জন্য অনুমোদিত বাজেট ঘোষণা করেন, যা আগে ছিলো ৩.২৪ বিলিয়ন ডলার থেকে ৫৭৭ মিলিয়ন ডলার কম। এ হিসেবে, এই বাজেটের পরিমাণ কমে গেছে।
জাতিসংঘের এক পৃথক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া ও মেক্সিকো মত প্রধান দাতা দেশের বকেয়া অর্থ পরিশোধ না করায় এই অর্থনৈতিক সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।
গুতেরেস বলেন, বাজেট কমানোর এই প্রক্রিয়ার মধ্যে, ফিলিস্তিন শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-র মতো জরুরি সংস্থাগুলোর বাজেট অপরিবর্তিত থাকবে। তিনি বলেন, গাজায় মানবিক সহায়তা চালিয়ে যাওয়া নিশ্চিত করতে ইউএনআরডব্লিউএ-কে কিছু শুল্ক থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, আফ্রিকার উন্নয়ন সংস্থার বাজেট ২০২৫ সালের মতোই রয়ে যাবে।
অন্যদিকে, বিভিন্ন সংস্থার মোট ২৬৮১টি পদে কাটা হবে এবং নতুন বাজেটের জন্য পুনঃসংগঠন করা হবে। গুতেরেস বলছেন, এই পদগুলো কার্যকরী দিক বিবেচনায় বা দক্ষতা বাড়ানোর জন্য কমানো হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, বর্তমানের ১৮ শতাংশ পদ শূন্য রয়েছে যা মূলত সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অর্থবকেয়া ও অর্থের অভাবে হওয়া। তবে, তিনি স্পষ্ট করেন, এই শূন্য পদ দ্বৈত পদের কারণে নয়, বরং অর্থের অভাবের জন্য।
বিশেষ রাজনৈতিক মিশনগুলোর বাজেটও ২০২৫ থেকে ২০২৬ সালে প্রায় ১৪৯.৫ মিলিয়ন ডলার কমিয়ে আনা হবে, যা গত বছরের তুলনায় ২১.৬ শতাংশ হ্রাস। এর ফলে কিছু কার্যক্রম ও মিশন বন্ধ করে দেওয়া হবে, এবং সংস্থাটির নিউইয়র্ক সদর দপ্তর থেকে উপস্থিতি কমানো হচ্ছে।
গুতেরেস জানিয়েছেন, ২০২৭ সালের শেষের দিকে তারা দুটি অফিস ভবনের লিজ বাতিল করবেন, যা থেকে তারা বছরে ২৪.৫ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ সঞ্চয় করতে পারবেন। এর মাধ্যমে, ২০১৭ সাল থেকে নিউইয়র্কে বিভিন্ন অফিস বন্ধ করে মোট ১২৬ মিলিয়ন ডলার অর্থ সাশ্রয় হয়েছে।






