যুক্তরাষ্ট্র বিদেশি শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীদের ওয়ার্ক পারমিট বা এমপ্লয়মেন্ট অথরাইজেশন ডকুমেন্ট (ইএডি)-এর মেয়াদ হ্রাস করেছে। আগে এই মেয়াদ ছিল পাঁচ বছর, কিন্তু এখন তা অর্ধেক করে ১৮ মাস বা দেড় বছরে নামিয়ে আনা হয়েছে। ইএডি সাধারণত একটি সরকারি নথি, যা অধিকাংশ সময় ‘ওয়ার্ক পারমিট’ হিসেবে পরিচিত। এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বিদেশি নাগরিকরা এই পারমিট পেলে তা প্রতি পাঁচ বছর পরে নবায়ন করতে হতো, কিন্তু এখন এটি প্রতি ১৮ মাসে নবায়ন করতে হবে। এই সিদ্ধান্তের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা কাস্টমস অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস (ইউএসসিআইএস), যা বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) এক অফিসিয়াল বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এখন থেকে এই নতুন নিয়ম প্রযোজ্য হবে শরণার্থী, আশ্রয় চেয়ে আবেদনকারী, নিজ দেশে ফেরত পাঠানো থেকে মুক্ত থাকা অভিবাসীসহ ১৯ ধরনের বিদেশি নাগরিকের ক্ষেত্রে। ২০২৪ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনের সময় তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে, ক্ষমতায় গেলে অবৈধ অভিবাসন এবং অভিবাসন সংক্রান্ত বিভিন্ন ইস্যুতে কঠোর ব্যবস্থা নেবেন। তার শপথের পর থেকেই অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযান শুরু হয়। পাশাপাশি, ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বৈধ অভিবাসীদের প্রবেশ কমানোর জন্য, যার মধ্যে অন্যতম হলো এইচ-১বি ভিসার ফি বৃদ্ধি। এই ভিসার মাধ্যমে বিশ্বের নানা দেশের তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, বিজ্ঞানী ও গবেষকরা মার্কিন প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ পান। সেপ্টেম্বরে এই ভিসার বার্ষিক ফি ১,৫০০ ডলার থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ ডলার করা হয়। অন্যদিকে, গত সপ্তাহে ওয়াশিংটন ডিসিতে এক আফগান শরণার্থী গুলিতে নিহত হন মার্কিন ন্যাশনাল গার্ডের দুই সদস্য। এই ঘটনার পর, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পদক্ষেপের অংশ হিসেবে আপাতত ১৯টি দেশের নাগরিকদের অভিবাসন সংক্রান্ত কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই দেশগুলো হলো আফগানিস্তান, মিয়ানমার, বুরুন্ডি, শাদা, কিউবা, কঙ্গো, ইকুয়াটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লাওস, লিবিয়া, সিয়েরা লিওন, সোমালিয়া, সুদান, টোগো, তুর্কমেনিস্তান, ভেনিজুয়েলা ও ইয়েমেন। পাশাপাশি, মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ক্রিস্টি নোয়েম জানান, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের এখন পর্যন্ত ৩০টির বেশি দেশের নাগরিকের জন্য। এই সিদ্ধান্তের ফলে, যেসব দেশের নাগরিকরা এই নিষেধাজ্ঞার আওতায়, তাদের জন্য এখন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ দীর্ঘদিনের জন্য বন্ধ।






