গত সপ্তাহজুড়ে বাংলাদেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজারের মোট মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে। এই সময়ে বাজারের মূলধন প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি বেড়ে গেছে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য ইতিবাচক সূচক। এর পাশাপাশি ডিএসইর মূল্যসূচক ও দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ছে।
এ সময়ে লেনদেন হওয়া মোট ৩৩৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৫ দশমিক ১৬ শতাংশের দাম বেড়েছে, যেখানে মাত্র ২২টির দাম কমেছে এবং ৩৬টির দাম অপরিবর্তিত থেকে গেছে। এর মানে এই যে, বিনিয়োগকারীরা বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারে লাভের মুখ দেখেছেন।
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসের পর ডিএসইর বাজারমূলধন দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৮৬ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা, যেখানে আগের সপ্তাহে এটি ছিল ৬ লাখ ৮৪ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা। ফলে এক সপ্তাহে বাজারের মোট মূলধন বেড়েছে প্রায় ২১ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা বা ০.২৩ শতাংশ।
মূল্যসূচকেও প্রভাব পড়েছে। ডিএসইএক্স সূচক সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ৭৭ দশমিক ২৬ পয়েন্ট বা ১.৫৮ শতাংশ, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা বৃদ্ধি। এর পূর্ববর্তী মূল্য সূচক ছিল ১৪১ দশমিক ৫৭ পয়েন্ট, যা ছিল ২.৮২ শতাংশ কম।
অথচো ডিএসইর অন্য দুটি সূচক—শরিয়া ভিত্তিক ডিএসই শরিয়া সূচক ও ডিএসই-৩০ সূচক—ও সপ্তাহের মধ্যে বৃদ্ধি পেয়েছে। ডিএসই শরিয়া সূচক ৯ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট বা ০.৯৫ শতাংশ বেড়ে ৩২ দশমিক শূন্য ৬ পয়েন্টে পৌঁছেছে, যেখানে আগের সপ্তাহে এটি ছিল ৩২ দশমিক ০৬ পয়েন্ট, যার মানে ৩ শতাংশের বেশী পতন।
একইভাবে, ডিএসই-৩০ সূচক ১১ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট বা ০.৬২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪২ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট, অর্থাৎ এর পতন কিছুটা প্রশমন পেয়েছে।
বাজারের লেনদেনের গতি ও পরিমাণও বাড়ছে। সপ্তাহজুড়ে গড় দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৪১৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা, যেখানে আগের সপ্তাহে এটি ছিল ৪১১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ, গড় দৈনিক লেনদেনের পরিমাণে ৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা বা ১.৪৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ারে, যেখানে প্রতিদিন গড় লেনদেন হয় প্রায় ১৭ কোটি ১ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৪ শতাংশের বেশি। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে খান সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, প্রতিদিন গড়ে ১৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে যা মোট লেনদেনের বড় অংশ। তিনে আছে ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং।
এছাড়াও, লেনদেনের শীর্ষ দশে স্থান পেয়েছে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, ফাইন ফুডস, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, বিডি থাই ফুড, একমি পেস্টিসাইড, মুন্নু ফেব্রিক্স ও আনোয়ার গ্যালভানাইজিং। সব মিলিয়ে, সপ্তাহের বাজার কার্যক্রম খুবই সক্রিয় ও উচ্ছ্বসিত অবস্থা দেখা গেছে।






