রাজবাড়ী জেলার পদ্মার তীরে উঁচু চরে বন্যা পরবর্তী সময়ে উন্নত মানের টমেটোর চাষ দ্রুত গড়ে উঠছে। বৈশ্বিক জলাবদ্ধতা ও বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকরা আগাম চাষে ঝুঁকেছেন, ফলে এই বছরে টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। পাশাপাশি ভালো বাজারমূল্য পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। স্থানীয় পর্যায়ে এই টমেটো এখন শুধু চাহিদা মিটিয়ে নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে যাচ্ছে। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সরেজমিন পর্যবেক্ষণ ও কৃষকদের সঙ্গে কথাবার্তার মাধ্যমে এই সব তথ্য জানা গেছে।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার চরাঞ্চলে গেলে দেখা যায়, এই বছর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ও উন্নত জাতের বীজের সঠিক ব্যবহারই ফলন বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে। বিশেষ করে হাইব্রিড জাতের টমেটো বিউটি প্লাসের আবাদ বেড়েছে, যার জন্য প্রতিটি বিঘা জমিতে প্রায় এক লাখ টাকার খরচ হচ্ছে। এই জাতের টমেটো বিঘা প্রতি ১০০ থেকে ১২০ মন ফলন দিচ্ছে। বাজারে টমেটোর চাহিদা বেশী থাকায়, किसानोंা ভালো দাম পেয়ে অত্যন্ত লাভবান হচ্ছেন।
শুকুর আলি বলেন, ‘এই বছর আমি মাচা পদ্ধতিতে হাইব্রিড বিউটি প্লাস জাতের টমেটো চাষ করেছি। ফলন চমৎকার হয়েছে এবং বাজারে দামও ভাল। এখন কেজিতে ৬০ থেকে ৭০ টাকা বিক্রী হচ্ছে। আমি পাঁচ বিঘা জমিতে এ পদ্ধতিতে চাষ করেছি, এতে খরচ কম ও লাভ বেশি।’
অন্য কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, তিনি সাত বিঘা জমিতে হাইব্রিড বিউটি প্লাস টমেটো আবাদ করেছেন। ফলনও আশানুরূপ হয়েছে। স্থানীয় বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় দামও ভালো পাচ্ছেন। ক্ষেতের খরচ বাদ দিয়ে এবার অনেক টাকা লাভের আশা করছেন।
গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের কাওয়াজানি গ্রামের চাষি সোবান শেখ বলেন, ‘এ বছর টমেটোর ফলন দুর্দান্ত হয়েছে। আলোর ফাঁদ ব্যবহারে পোকা-মাকড় নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি। বাজারে ভালো দাম পাবার কারণে আমরা সবাই খুব খুশি।’
গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রায়হানুল হায়দার জানিয়েছেন, এই বছর উপজেলায় ২১৬ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের টমেটো চাষ হয়েছে। ফলনও বেশ ভালো, বাজারে দামও যথেষ্ট। তিনি আরও বলেন, ‘কৃষকদের সেক্স ফরোমোন ফাঁদ প্রযুক্তি ব্যবহার, রোগ-বালাই থেকে রক্ষা, সুষম সার ও কীটনাশক ব্যবহারে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর ফলশ্রুতিতে কৃষকরা লাভের মুখ দেখছেন, তাদের জীবনমান উন্নত হচ্ছে। পাশাপাশি, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই টমেটো বিক্রি করে তারা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।’






