মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, একটি নির্দিষ্ট দল মুক্তিযুদ্ধকে নিজেদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করত এবং দেশের সাধারণ জনগণকে দাসে পরিণত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিল। তিনি এটি বলেন মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত যুব ম্যারাথনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে।
ডা. শফিকুর রহমান ব্যাখ্যা করেন, পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর বৈষম্যমূলক নীতি এবং অনিয়মিত আচরণের কারণেই এই দেশের মানুষ তাদের বিরুদ্ধে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। ১৯৭০ সালের বহুল প্রতীক্ষিত নির্বাচনের পরে যুদ্ধের বাধ্যবাধকতা সৃষ্টির পরিস্থিতি তৈরি হয় এবং সেই সময় দেশের সাধারণ জনগণ স্বাধীনতার জন্য ঝাপিয়ে পড়েছিল। তবে স্বাধীনতা অর্জিত হওয়ার পরে তৎকালীন শাসনক্ষমতা জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়। তিনি অভিযোগ করেন, বহুদলীয় গণতন্ত্রের ধ্বংস এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাধ্যমে জনগণের মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল, পাশাপাশি রক্ষী বাহিনীর নামে এক দমনমূলক ফৌজ গড়ে তোলা হয়েছিল।
তিনি ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের ঘটনাও স্মরণ করেন, যেখানে বিদেশ থেকে পাঠানো ত্রাণের অনিয়মের কারণে বিপুল পরিমাণ খাদ্য বিক্রি হয়ে যায়, যার ফলে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। সেই সময় ঢাকায় মৃত মানুষের লাশ দাফন করতে হয়েছিল। তিনি উল্লেখ করেন, স্বপ্নের সোনার বাংলাকে শ্মশানে রূপান্তরিত করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের গত শাসনামলের ব্যাপক সমালোচনা করেছেন জামায়াতের এই নেতা, যেখানে তিনি বলেন, দলটি তিন দফায় ক্ষমতায় এসে রক্তপাত ও সহিংসতার রাজনীতি চালিয়ে গেছে। ১৯৯৬ সালে ক্ষমা চাইলেও তারা ক্ষমতায় গিয়ে আবারো তাদের প্রকৃত চরিত্রে ফিরে আসে। ২০০৯ সালের পর থেকেই খুন, গুম, ধর্ষণ ও দমন-পীড়নের রাজনীতির মাধ্যমে দেশের পরিস্থিতি জটিলতর হয় এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়। তিনি সাম্প্রতিক বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনাগুলোকেও সেই একই অপশক্তির অব্যাহত পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেন।






