২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই থেকে নভেম্বর) সার্বিকভাবে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও অন্যান্য বাজারে কমলেও, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডার বাজারে রপ্তানিতে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি দেখা গেছে। বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) কর্তৃক প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে দেশের পোশাক রপ্তানি সমগ্র বাজারে পৌঁছেছে ১৬.১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের বছর একই সময় ছিল ১৬.১১ বিলিয়ন ডলার, লাখো বা ক্রমবর্ধমান একটু বেশি। যা থেকে বোঝা যায়, সামগ্রিকভাবে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি খুব বেশি না হলেও নির্দিষ্ট বাজারে প্রবৃদ্ধির হার মজবুত। ইংরেজিতে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, অর্থাৎ জুলাই-নভেম্বর সময়ে এই বাজারে রপ্তানি হয়েছে ৩.২২ বিলিয়ন ডলার, যেখানে আগের বছর ছিল ৩.১৩ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া, কানাডায় রপ্তানি বিক্রি ৬.৫১ শতাংশ বেড়ে ৫২৬ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, এবং যুক্তরাজ্যেও রপ্তানি ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৪৮০ মিলিয়ন ডলারে দণ্ডিত হয়েছে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭ দেশের মধ্যে স্পেন, পোল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসে রপ্তানি বাড়লেও, জার্মানি, ফ্রান্স, ডেনমার্ক ও ইতালিতে রপ্তানির পরিমাণ কমে গেছে। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া ও রাশিয়া, এই নন-ট্র্যাডিশনাল বাজারগুলোতে রপ্তানি উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, এ বাজারগুলোতে প্রথম পাঁচ মাসে মোট রপ্তানি কমেছে ৩.৩৯ শতাংশ। বিশেষ করে, ভারততে রপ্তানি ৮ শতাংশের বেশি কমে গেছে, যেখানে এই সময়ে রপ্তানি হয়েছে ২৯৮ মিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ২৬ মিলিয়ন ডলার কম। অস্ট্রেলিয়া ১০ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়া ১২ শতাংশ, মেক্সিকো ১৬ শতাংশ, তুরস্ক ২৫ শতাংশ এবং রাশিয়ায় রপ্তানি ২৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বব্যাপী ভোক্তার ব্যয় শ্লথগতি, সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে কার্যকর বিপণন উদ্যোগের ঘাটতি, বাজারের চাহিদা অনুযায়ী পণ্যে বৈচিত্র্য আনতে না পারা এবং নন-ট্র্যাডিশনাল বাজারে সরকারি প্রণোদনা কমে যাওয়াই রপ্তানি কমে যাওয়ার মূল কারণ। বাংলাদেশের মোট পোশাক রপ্তানির প্রায় ১৬ শতাংশ যায় নন-ট্র্যাডিশনাল বাজারে, যেখানে অন্তর্ভুক্ত প্রায় ১৫টি দেশের নাম। এই বাজারগুলো সাধারণত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও ইউরোপের বাইরে থাকা অন্যান্য দেশে বিবেচিত হয়। তবে, কিছু দেশ এখনও ইতিবাচক প্রবণতা দেখাচ্ছে। ব্রাজিল, চীন, জাপান, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে।






