যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া দুটি ভয়াবহ ঘটনায় কেন্দ্র করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গ্রিন কার্ড লটারি কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন। এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মাসের শুরুতে ঘটে যাওয়া ম্যাসাচুসেটসের ব্রাউন ইউনিভার্সিটি ও এমআইটির ভয়াবহ গুলিবর্ষণের ঘটনায়। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম এক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জানান, ট্রাম্পের নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্রের সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস (ইউএসসিআইএস) এই কর্মসূচি বন্ধ করার জন্য বলা হয়েছে। গত ১৮ ডিসেম্বর, বুধবার, এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। জানা গেছে, ওই দিন মৃত অবস্থায় পর্তুগালের একটি নাগরিক ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের ঘটনা ঘটে। ওই ব্যক্তি ২০১৭ সালে ডাইভারসিটি ভিসা বা গ্রিন কার্ড লটারি কর্মসূচির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন এবং পরে গ্রিন কার্ড পান। ক্রিস্টি নোয়েম জানান, এই ভিসা কর্মসূচি বন্ধের মূল উদ্দেশ্য হলো, আতঙ্ক ও অপব্যবহার রোধ করে দেশের নিরাপত্তা জোরদার করা। এই লটারির আওতায় প্রতি বছর সর্বোচ্চ ৫০ হাজার ভিসা দেওয়া হয়, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশের হার কম এমন দেশের নাগরিকদের মধ্য থেকে লটারির মাধ্যমে এই ভিসা দেওয়া হয়। ট্রাম্প পূর্বেও এই কর্মসূচি বন্ধের জন্য লড়াই করেছিলেন, বিশেষ করে ২০১৭ সালের নিউইয়র্কে ট্রাক হামলার পর। ওই হামলার মাধ্যমে আটজন নিহত হন, এবং এর জন্য দায়ী বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সমর্থক, যেমন সাইফুল্লো সাইপভ, উজবেকিস্তানের নাগরিক। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয় যখন নিউ হ্যাম্পশায়ারের সেলেমে একটি স্টোরেজ থেকে নেভেস ভালেন্তের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ধারণা করছেন, তিনি নিজেই গুলিবিদ্ধ হয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তদন্তে জানা যায়, সন্দেহভাজন ব্যক্তির নাম ও বিস্তারিত তথ্য পেয়ে পুলিশ ছয় দিনের অনুসন্ধানে পৌঁছে। তার কাছে থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র, একটি ব্যাগ এবং গাড়ি পাওয়া যায়, যা ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের গুলিবর্ষণের সঙ্গে মিলেছে বলে মার্কিন কর্মকর্তাদের অভিমত। ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা প্যাকসন জানিয়েছেন, নেভেস ভালেন্তে এতদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছিলেন এবং সেখানে পদার্থবিজ্ঞানে পিএইচডি করছিলেন। বর্তমানে তার সঙ্গে কোন সম্পর্ক নেই বলে জানান। পুলিশ নিশ্চিত করেছে, সোমবার ম্যাসাচুসেটসের ব্রুকলাইনে নিজের বাসায় গুলি করে হত্যা করেছেন এই অধ্যাপক। জানা গেছে, তিনি ১৯৯০ এর দশকের শেষ দিকে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। দুটো ঘটনার মধ্যে সম্ভবত যোগাযোগ রয়েছে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ। গত ১৩ ডিসেম্বর, ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফাইনাল পরীক্ষার সময় একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ভবনে বন্দুকধারীর গুলিবর্ষণে দুই ছাত্র নিহত ও নয়জন আহত হন। নিহতরা হলেন, দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এলা কুক (১৯) এবং ও মুখাম্মাদ জিজ উমুরজোকভ (১৮), যিনি উজবেক-আমেরিকান এবং সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। এই সমস্ত ঘটনায় জাতিধর্ম বা কর্মসূচির বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট সবাই আতঙ্কে থাকছেন।






