স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আজ সোমবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের শেষে নিশ্চিত করেছেন যে, তার ব্যক্তিগত পদত্যাগের খবর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং এটি শুধুমাত্র গুজব। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘পদত্যাগ করলে আমি এখানে থাকতাম না।’ এই স্পষ্ট মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন জল্পনা-কল্পনা ও বিভ্রান্তি দূর করেন।
বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জরুরি পরিস্থিতির মধ্যে গণঅভ্যুত্থানের একটি শীর্ষ যোদ্ধা শরীফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানান। তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা ফয়সালের সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি, তবে তাঁর অবস্থান জানা মাত্রই দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। ইতোমধ্যে, ফয়সালের পরিবারসহ তার বাবা, মা, স্ত্রী এবং শ্বশুর-শাশুড়িকেও আটক করা হয়েছে। এছাড়াও, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের চালক ও দালাল চক্রের সদস্যদেরও গ্রেফতার করা হয়েছে। সরকারের উদ্দেশ্য হলো এই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করা।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলমান ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ সম্পর্কেও তিনি জানিয়েছেন, এই অভিযান চালিয়ে সন্ত্রাসী ও অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত মোট ৬ হাজার ৯৯৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তার জন্য সরকার বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে প্রখ্যাত প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার সম্পাদকসহ মোট কয়েকজন ব্যক্তির জন্য গার্ডম্যান দিয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরলে তাঁকেও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়া হবে বলে নিশ্চিত করেছেন উপদেষ্টা।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের ১৮তম সভায় চলমান বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটের প্রস্তুতি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচন, বড়দিন ও থার্টি ফার্স্ট নাইটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অন্যতম। বিশেষ করে, এই জকসু নির্বাচনটি শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্যভাবে সম্পন্ন করার ব্যাপারে আশার কথা ব্যক্ত করা হয়েছে। এছাড়া, উসকানিমূলক সাইবার প্রচারণা রোধ, শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস পরিশোধ, মাদকবিরোধী অভিযান, রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও পার্বত্য অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে বিভিন্ন নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশের সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।






