রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত প্রথম আলো পত্রিকার কার্যালয়ে শ্বাসরোধী হামলা ও ভয়ঙ্কর ভাঙচুরের ঘটনায় দেশের গণমাধ্যমকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। অজ্ঞাত প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ জনের নামে একাধিক অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনা নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ইবনে মিজান, আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে। এই মামলায় সন্ত্রাসবিরোধী আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন এবং সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের বিভিন্ন কঠোর ধারায় অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
পত্রের এক সূত্র জানায়, হামলার ঘটনায় ঘটনার রাতে সশস্ত্র একদল দুষ্কৃতকারী প্রথম আলো কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয় এবং উসকানিমূলক স্লোগান দিতে শুরু করে। মোবাইল ফোন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে তারা দ্রুত উসকানি ছড়িয়ে দেয়, যাতে করে একেবারে হাজার হাজার মানুষ এই ঘটনার সঙ্গে যোগ দেয়। রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে এই দুষ্কৃতকারীরা মূল ভবনের ফটক ও শাটার ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে চরম তাণ্ডব চালায়। তারা অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র, আসবাব ও কম্পিউটারসহ সম্পূর্ণ অফিস সরঞ্জাম জব্দ করে আগুন লাগিয়ে দেয়। পাশাপাশি, অফিসে থাকা দেড় শতাধিক কম্পিউটার, ল্যাপটপ, নগদ অর্থ ও প্রকাশনার বইপত্র লুট করে নিয়ে যায়।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, অপরাধীদের পরিকল্পনায় তারা ভবনের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ভেঙে দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা বাধা দেয় এবং ফায়ার সার্ভিসে কর্মীদের কাজে বাধা সৃষ্টির জন্য ইচ্ছা করে সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো ভেঙে ফেলে। প্রথম আলো কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, চুরি হওয়া সম্পদের মূল্য প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং সম্পূর্ণ ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩২ কোটি টাকা। পুলিশ দ্রুত এই মামলার তদন্তে লিপ্ত হয়ে অভিযুক্তদের শনাক্তের জন্য কাজ শুরু করেছে, ইতোমধ্যে কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। এই বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় দেশের বিভিন্ন মহলে তীব্র নিন্দার ঝড় উঠে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সুরক্ষার গুরুত্ব ফেরো উল্লেখযোগ্য হয়ে উঠেছে।






