মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) গণভবনে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় দেশের অন্যতম বৃহৎ ২২টি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে, যার মোট ব্যয় ধরো ৪৬ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা। সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মন্ত্রণালয়ভিত্তিক ১৪টি নতুন প্রকল্প, পাশাপাশি পাঁচটি সংশোধিত এবং তিনটি মেয়াদ বৃদ্ধির প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে, যেখানে সরকারি তহবিল থেকে অর্থ গ্রহণ করা হবে ৩০ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা, আর অবশিষ্ট অর্থ যাবে প্রকল্প ঋণ ও সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে কর্ণফুলীর সংযোগ সড়ক উন্নয়ন এবং ঢাকা-সিলেট তামাবিল মহাসড়ক চারলেন করে升级 করার জন্য ভূমি অধিগ্রহণের পরিকল্পনা। এছাড়াও দিনাজপুরের হিলি-ঘোড়াঘাট জাতীয় মহাসড়ককে মান উন্নয়নের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতায় নারায়ণগঞ্জে আলীগঞ্জে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য আটটি উচ্চতল ভবন নির্মাণের সংশোধিত প্রকল্পও অনুমোদিত হয়েছে।
স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে রয়েছে ঢাকা ওয়াসা প্রশিক্ষণ একাডেমি স্থাপন, সিলেটের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ, এবং পটুয়াখালীর গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের প্রকল্প। জ্বালানি খাতে এগিয়ে গেছে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প, যা ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণে সহায়তা দেবে। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে রাঙ্গামাটির কর্ণফুলী ও সংশ্লিষ্ট নদীগুলোর পানি ব্যবস্থাপনা এবং সুরমা-কুশিয়ারা নদী অববাহিকার উন্নয়ন সম্পর্কিত চারটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মোংলা ও সাভারের উন্নয়ন প্রকল্পে বরাদ্দ দেওয়ার পাশাপাশি, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় নার্সিং শিক্ষা ও গবেষণার সক্ষমতা বাড়াতে নতুন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। শিক্ষাখাতে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিইউপি (বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি প্রগতি) উন্নয়নের জন্য পৃথক পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে গাজীপুরের কোনাবাড়িতে দুস্থ শিশুর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পুনর্নির্মাণে এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দারুল আরকাম ইসলামী শিক্ষা পরিচালনায় দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্প চূড়ান্ত হয়।
বৈঠকে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর পাশাপাশি, সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টার নিজস্ব ক্ষমতাবলে অনুমোদিত ৫০ কোটি টাকার কম ব্যয়ে ১০টি ছোট প্রকল্পের বিবরণও দেওয়া হয়, যেখানে অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৩ এবং র্যাবের আভিযানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে। সব মিলিয়ে, এই প্রকল্পগুলো দেশের অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্যমন্ডল এবং গ্রামীণ অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।






