বাংলাদেশ এখন একটি আধুনিক ও উন্নত টেলিযোগাযোগ যুগে প্রবেশের পথে। দীর্ঘ সময়ের অপেক্ষার পর, আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশ–২০২৫’ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। এই নতুন আইন কার্যকর হলে দেশের টেলিযোগাযোগ সম্পর্কিত বিদ্যমান আইন ও নীতিমালায় বিশাল পরিবর্তন আসবে, যা খাতটিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধির পথে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এই অধ্যাদেশের মূল লক্ষ্য হলো টেলিযোগাযোগ খাতকে আন্তর্জাতিক মানের সাথে তাল মিলিয়ে আধুনিক করা। এতে লাইসেন্সিং প্রক্রিয়া অনেক সহজ করা হয়েছে, যা নতুন বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করবে। পাশাপাশি, দেশের খ্যাতি বাড়াতে ৫জি প্রযুক্তি ও ক্লাউড সেবা দ্রুত বিস্তার করা এ আইনটির একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এতে ইন্টারনেট শাটডাউন বা সেবার সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় নিষেধাজ্ঞার উপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে যত্রতত্র ইন্টারনেট বন্ধ করে নাগরিকদের ভোগান্তি কমানো যায়। ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিতের পাশাপাশি একটি আধুনিক ও কার্যকর নিয়ন্ত্রণ কাঠামো গড়ে তোলাও এই উদ্যোগের লক্ষ্য।
মোটেও, এই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশটি চূড়ান্ত অনুমোদনের আগে তিনবার উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পাঠানো হয়েছিল। এর আগে বিটিআরসি এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কিছু আপত্তির কারণে আড়িপাতার ধারা এবং অনুমোদন প্রক্রিয়া সংশোধনের জন্য পাঠানো হয়। সর্বশেষ বুধবারের বৈঠকেও কারিগরি দিক থেকে পর্যালোচনার জন্য এটি আবারো পাঠানো হয়েছিল। সব পক্ষের মতামত এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ নিয়ে অবশেষে আজকের দিনে এর চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হয়।
বর্তমানে, এই প্রকল্পের খসড়া জনসাধারণের মতামতের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা ও সাধারণ নাগরিকরা মনে করছেন, এ আইনি কাঠামো বাস্তবায়িত হলে তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার কমবে, পাশাপাশি বাংলাদেশের ডিজিটাল সেবা ও প্রযুক্তিগত ক্ষমতা বহুগুণে বাড়বে। মূলত, প্রযুক্তির দ্রুত পরিবর্তনকে মাথায় রেখে এই যুগোপযোগী এবং নিরপেক্ষ টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলাই সরকারের এই পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য।






