বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ নগরী ঢাকা আজ আবারও বায়ুদূষণের শীর্ষে অবস্থান করছে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ার বা IQAir এর তথ্যমতে, বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় রাজধানীর বায়ুমান সূচক বা অ্যাকিউআই (AQI) স্কোর রেকর্ড করা হয়েছে ২৩৯। এই মানদণ্ডে ঢাকার বাতাস বর্তমানে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে রয়েছে, যা নাগরিক স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠছে। এই আন্তর্জাতিক দূষণের তালিকায় ঢাকার পরে রয়েছে কায়রো, তেহরান, দিল্লি এবং সারায়েভো শহরগুলো, তবে তাদের স্কোর ঢাকার চেয়ে কিছুটা কম।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, প্রতীয়মান হয় যে, শীতের এই সময়েই অর্থাৎ নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকার বাতাসের মান দ্রুত ক্ষুণ্ন হয়। এর মূল কারণগুলো হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বিভিন্ন নির্মাণ কাজ, পুরানো ভাঙাচোরা রাস্তা থেকে উড়িয়ে যাওয়া ধুলা-বালি, ইটভাটার ধোঁয়া এবং যানবাহনের কালো ধোঁয়া। বৃষ্টিহীন শীতের দিনগুলোতে এই দূষিত কণাগুলো বাতাসের নিম্নস্তরে আটকে থাকে, ফলে দূষণের পরিমাণ অনেক বেশি বেড়ে যায়। আইকিউএয়ার এর মানদণ্ড অনুযায়ী, AQI ১০১ থেকে ১৫০ হলে তা সংবেদনশীল ব্যক্তিদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এবং ২০১ এর বেশি হলে তা মারাত্মক অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়।
এই ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন, ধুলোবালি নিয়ন্ত্রণে শহরের প্রধান সড়কগুলোতে নিয়মিত পানি ছিটানো এবং নির্মাণের কাজ চলছে এমন এলাকায় সঠিকভাবে প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থাগ্রহণ করা জরুরি। একইসাথে, শহরের বায়ু মান উন্নত করতে অপ্রয়োজনীয় ও পুরোনো যানবাহন চলাচল বন্ধ করারও দরকার। বিষাক্ত এই বাতাস শিশু এবং বয়স্কদের শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদী ফুসফুসের রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে, যা থেকে রক্ষার জন্য নাগরিকদের সচেতন থাকার আহ্বান জানাচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। মূলত, একসাথে সম্মিলিত উদ্যোগ ছাড়া ঢাকার বাতাসের এই বিপদজনক অবস্থা কাটিয়ে ওঠা কঠিন বলে মনে করছে পরিবেশবিদরা।






