প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়, পাশাপাশি ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনে হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মতামত ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বিষয়ক বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার আইরিন খান। তিনি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার জন্য সরকারের উদ্দেশ্যে জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশে শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোতে ‘মব’ বা জনতার হটপ্রেস হামলা খুবই উদ্বেগজনক ঘটনা। জাতিসংঘের একজন বিশেষজ্ঞের ভাষায়, এসব হামলা খুবই দুঃখজনক এবং এগুলোর অবশ্যই দ্রুত তদন্ত ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে দেশের স্বনামধন্য তরুণ নেতা শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর পর দেশের বিভিন্ন অংশে ব্যাপক বিক্ষোভ ও ধর্মঘট শুরু হয়। ওই সময় ডেইলি স্টার ও প্রথম আলো কার্যালয়সহ ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালানো হয়। এছাড়া, নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবীরের ওপরও হামলা হয়, যা দেশের সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের নেতৃবর্গের উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দেয়।
আইরিন খান বলেন, ‘আমি একজন অনুপ্রেরণাদায়ী নেতার পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। তার মৃত্যু ঘিরে যে সহিংসতা ও হামলা চলেছে, তার জন্যও আমি কঠোর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘জনরোষকে ব্যবহার করে সাংবাদিক ও শিল্পীদের ওপর হামলা বা পরিকল্পিত আক্রমণ খুবই বিপজ্জনক বিষয়, বিশেষ করে যখন দেশ নির্বাচনমুখী। এর ফলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কণ্ঠস্বর ও ভিন্নমত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যা গণতন্ত্রের জন্য মারাত্মক আঘাত।’
আইরিন খান বলেন, ‘এসব হত্যাকাণ্ড ও হামলার পেছনে মূল কারণ হলো বিচারহীনতা ও সরকারের দূর্বলতা। অন্তর্বর্তী সরকার গত এক বছরে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, অনলাইন ও অফলাইন গণমাধ্যমের চাপে রেখেছে। অনেক সাংবাদিককে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গ্রেপ্তার, হুমকি ও হত্যার শিকার হতে হয়েছে। সম্প্রতি ঘটেছে বেশ কিছু হত্যাকাণ্ড, যা চাপা দেয়ার চেষ্টা চলছে।’ তিনি জানান, জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় এসব হামলা অব্যাহত রয়েছে এবং দেশের গণতান্ত্রিক প্রাণবন্ততা হুমকির মুখে পড়েছে।






