চলমান ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সরকার রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা বিশেষভাবে উন্নত করেছে। সংশোধিত বাজেটে এই লক্ষ্যমাত্রা ২৪ হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়ে এখন মোট ৫ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। একই সঙ্গে বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ শতাংশ, এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধি হার ধার্য করা হয়েছে ৫ শতাংশ।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সাপ্তাহিক এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সংশোধিত বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়। এ বৈঠক প্রধান উপদেষ্টার অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সংশোধিত বাজেটের কার্যকর তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১ ফেব্রুয়ারি, যা থেকে এই অর্থবছরে এর বাস্তবায়ন শুরু হবে।
বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা শফিকুল আলম। তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের গতি সন্তোষজনক। জুলাই থেকে অক্টোবর অবধি এই অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি ছিল ২৪.১ শতাংশ, যা পরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬.৪ শতাংশে। বিভিন্ন পর্যায়ে এই প্রবৃদ্ধির ফলে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে।
সংশোধিত বাজেটে নির্ধারিত মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য এখন ৫ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে আসবে ৫ লাখ ৩ হাজার কোটি টাকা, কর-বহির্ভূত রাজস্ব থেকে পাওয়া যাবে ৬৫ হাজার কোটি টাকা, এবং অন্যান্য উৎস থেকে সংগৃহীত হবে ২০ হাজার কোটি টাকা।
প্রেস সচিব আরও জানান, গত বছরের শেষ দিকে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার প্রায় ১৪ শতাংশে পেঁঁচেছিল। তবে বর্তমানে এই হার কমে আড়াই শতাংশের কাছাকাছি এসেছে। শীতের মৌসুমে সবজির উৎপাদন ও সরবরাহ বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সরকার আশা করছে মূল্যের সংকোচন আরও জোরদার হবে। এই অর্থবছরের শেষে মূল্যস্ফীতির হার ৭ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সংশোধিত বাজেটে মোট সরকারি ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা, যা মূল বাজেটের ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা থেকে ২ হাজার কোটি টাকা কম। অগ্রাধিকার সংযুক্ত অর্থায়নে উন্নয়ন কর্মসূচির জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২ লাখ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩.৩ শতাংশ। মূল বাজেটে এডিপির পরিকল্পনা ছিল ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩.৭ শতাংশ। ফলে এই বরাদ্দ কমিয়ে মোট ৩০ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে।
বৈদেশিক অর্থায়ন হিসেবে এডিপিতে ধরা হয়েছে ৭২ হাজার কোটি টাকা, আর দেশীয় অর্থায়ন হবে ১ লাখ ২৮ হাজার কোটি টাকা। পরিচালন ও অন্যান্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা।
সংশোধিত বাজেটের মোট ঘাটতি নির্ধারিত হয়েছে ২ লাখ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩.৩ শতাংশ। এই ঘাটতি পূরণে বৈদেশিক উৎস থেকে ৬৩ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে, আর অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে নেওয়া হবে ১ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা।






