বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দীর্ঘ ১৭ বছর নির্বাসিত জীবন শেষে দেশে ফেরার ঐতিহাসিক দিনে তাকে অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে পদত্যাগ করেছেন দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব মীর আরশাদুল হক। আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিশেষ বার্তার মাধ্যমে তিনি এই ঘোষণা দেন। তার পাশাপাশি তিনি এই নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। মীর আরশাদুল হক এনসিপিতে কেন্দ্রীয় নীতি নির্ধারণী পদসহ চট্টগ্রাম মহানগরের প্রধান সমন্বয়কারী ও পরিবেশ সেলের প্রধানসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি দায়িত্বে ছিলেন।
পদত্যাগের কারণ হিসেবে তিনি এনসিপির বর্তমান রাজনৈতিক পথপ্রদর্শনে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন। তাঁর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানের আশা ও নতুন রাজনৈতিক স্থিরতা প্রতিষ্ঠার জন্য দলটি শুরু করলেও গত ১০ মাসে তার নেতারা সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি ধারণা করেন যে, দলটির জন্য থাকা স্বপ্ন ও সম্ভাবনা বিনাশ হয়েছে। তাঁর মতে, বর্তমান নেতৃত্ব ভুল পথে হাঁটছে, যা তার ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক আদর্শের পরিপন্থী। সেই কারণেই তিনি এনসিপির সঙ্গে সকল রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তিনি তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, বর্তমানে দেশের সংকটকালীন সময়ে এই তরুণ নেতা নিজেকে দেখিয়ে দিয়েছেন যে, দেশের সামগ্রিক সমস্যা সমাধানে তারেক রহমানের মতো রাজনৈতিক নেতাই একমাত্র সম্ভাবনাময় ব্যক্তি। তিনি লক্ষ্য করেছেন, যেখানে অন্যান্য দল গোষ্ঠী ধর্ম বা সাময়িক জনপ্রিয়তা নিয়ে নির্বাচনী রূপসজ্জা চালাচ্ছে, সেখানে তারেক রহমান গঠনমূলক ও দৃষ্টিনন্দন রূপরেখা উপস্থাপন করছেন, যেমন – শিক্ষা, পরিবেশ, শান্তিপূর্ণ সমাজ ও কর্মসংস্থান। এই দূরদর্শী ও বাস্তবমুখী পরিকল্পনাগুলিই তাকে বিএনপির প্রতি আকৃষ্ট করেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
আরশাদুল হক দেশের তরুণ প্রজন্মকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, কোনো হুজুগ বা জনকরবির প্রভাবে না ভিজে, দেশের স্বার্থ ও ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তারেক রহমানের ভিশনকে সমর্থন করা উচিত। তিনি মনে করেন, আজকের দিনটি বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য এক শুভক্ষণ, যা নতুন আশা ও শ্রমের আলো নিয়ে এসেছে। তিনি ব্যক্তিগতভাবে এনসিপি নেতাদের শুভকামনা জানালেও, বলছেন, ভবিষ্যতে তিনি তারেক রহমানের ভিশনের বাস্তবায়নের পক্ষে থাকবেন।
বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনের আগে এই ধরনের দলের নেতৃত্বের এমন পদত্যাগ ও সমর্থন রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন এক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তারা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ রাজনীতির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে এবং ভবিষ্যৎ রাজনীতির পরিবেশে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।






