দেশের বেসরকারি খাতের অগ্রগতি নিশ্চিতে ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগে সহায়ক পরিস্থিতি সৃষ্টি করার প্রয়োজনীয়তা ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন বক্তারা। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)-এর ৬৪তম সাধারণ সভায় সদস্যবৃন্দ ভাব প্রকাশ করে বলেছেন, অর্থনীতির উন্নয়নে সাধারণ নীতিমালা ও সাংগঠনিক সংস্কার জরুরি। ভবিষ্যতে দেশের বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও ব্যবসা পরিবেশ আরও উন্নত করতে, নীতিমালার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন, রাজস্ব ব্যবস্থার প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণ, লজিস্টিক খাতের উন্নয়ন, উদ্যোক্তাদের জন্য স্বল্পসুদে ঋণ সহজীকরণ ও প্রক্রিয়া সহজতর করার জন্য তারা গুরুত্ব দেন। এছাড়াও, দেশের শিল্পখাতে ক্রমবর্ধমান জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন সংগঠনের সদস্যবৃন্দ। সবাই মনে করেন, এসব উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যবসার জন্য একটি সহায়ক পরিবেশ তৈরি সম্ভব হবে, যা আর্থিক অগ্রগতি এবং স্থায়ী উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে।
অপর দিকে, গত ২৩ ডিসেম্বর ডিসিসিআই মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি তাসকীন আহমেদ। তিনি বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে বৈশ্বিক অস্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক সংকট ও ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি আমরা। বিদ্যমান পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য বর্তমান সরকার কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিলেও, ব্যবসা পরিচালনায় সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিতের জন্য আরও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সুশাসন ও যুগোপযোগী নীতিমালা অপরিহার্য।
নেতৃবৃন্দ উপলব্ধি করেন, চলতি বছর তারা বিভিন্ন সেমিনার, কর্মশালা, বৈঠক ও আলোচনা মাধ্যমে নীতিমালা প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবদান রেখেছে। বিশেষ করে, আধুনিক তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য প্রথমবারের মতো ‘অর্থনৈতিক অবস্থান সূচক’ (ইপিআই) চালু করেছে ডিসিসিআই, যা বিভিন্ন খাতে অর্থনীতির ট্রেড ও উৎপাদন কার্যক্রমের পরিবর্তন নিরীক্ষণ করবে।
এছাড়াও, বাংলাদেশের ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য তারা সংযুক্ত আরব আমিরাত, শ্রীলংকা, অস্ট্রেলিয়া, হংকং, তাইওয়ানে সাতটি বাণিজ্য প্রতিনিধিদল প্রেরণ করেছে এবং বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বিভিন্ন সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ভবিষ্যতেও দেশের বেসরকারি খাতের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তারা।
এ সময় প্রাক্তন নেতৃবৃন্দ সংবিধান, অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ও ব্যবসায়িক ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করেন, যেখানে উল্লেখ্য হয়, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও জোটবদ্ধ সামর্থ্য ছাড়াই অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জন সম্ভব নয়। এতে বৈশ্বিক অস্থিরতা ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রভাব প্রশমন করতে প্রত্যেকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন।
উক্ত সভাটির সমাপ্তি সঞ্চালনা করেন ডিসিসিআই’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ড. এ কে এম আসাদুজ্জামান পাটোয়ারী। ভবিষ্যতের জন্য ব্যবসা, বিনিয়োগ ও অর্থনীতির স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও ঐক্য অপরিহার্য বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট নেতারা।






