কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশের উপ-দূতাবাসের সামনে আবারও ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। সম্প্রতি ময়মনসিংহে দিপু দাশ নামে এক হিন্দু যুবককে হত্যার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন হিন্দু সংগঠনের নেতা ও সাধু-সন্তদের নেতৃত্বে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপ-দূতাবাস ও এর আশেপাশের এলাকা কঠোর পুলিশি নিরাপত্তায় ঘিরে ফেলা হয়।
বিকেল দিকে কলকাতার শিয়ালদহ স্টেশন চত্বর থেকে গেরুয়া কাপड़ পরা সাধু-সন্তদলের একটি বড় মিছিল শুরু হয়। এই মিছিল বাংলাদের উপ-দূতাবাসের দিকে অগ্রসর হলে কলকাতা পুলিশ সেটি বেগতিক অবস্থায় বেহালা বাগান মোড়ে আটকানোর চেষ্টা করে। তবে জানা গেছে, এই মিছিলটি শান্তিপূর্ণভাবেই এগিয়েছে।
এরপর বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারীসহ চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে বৈঠক শেষে তারা বাহিরে এসে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, সোমবার থেকে বিভিন্ন হিন্দু সংগঠন, সাধু-সন্ত মহাজোট ও বিজেপির এমপি-তৃণমূল বিধায়কদের মাধ্যমে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের কাছে তাদের ক্ষোভ, প্রতিবাদ ও দাবি পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করেন, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে হিন্দুদের ওপর অনেক হুমকি ও লাঠিচার্জ করেছেন। শুভেন্দু আরও বলেছিলেন, মঙ্গলবারের ঘটনায় পুলিশ লাঠিচার্জে কমপক্ষে ১০ জন মানুষ আহত হয়েছেন। মাথা ফেটেছে, নাক ভেঙেছে এমনকি সাধু-সন্তদের ওপরও হামলা চালানো হয়েছে।
তিনি জানান, এই ঘটনায় ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে; এর মধ্যে আগে ৭ জন নারী জামিন পেয়েছেন আর শুক্রবার আরও ১২ জনকে আদালতে হাজির করা হয়েছে।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, তারা ডেপুটি হাইকমিশনারকে জানিয়ে দিয়েছেন, যদি দিপু চন্দ্র দাশের খুনের বিষয় বা অন্য কোন দাবি সমাধান না হয়, তবে তারা ১০ হাজার মানুষের সমন্বিত অবস্থান ধর্মঘট এবং আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। ডেপুটি হাইকমিশনার জানান, সরকার থেকে অনুমতি নিয়ে এই প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
এতে তিনি আরও বলেন, জানতে চাওয়া হয় দিপু দাশের অপরাধ কী ছিল। জবাবে জানানো হয়, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাদের জামিন দেওয়া হবে না। নিহতের পরিবারকে সরকার পুরো ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে বলে জানানো হয়।
সর্বশেষ, শুভেন্দু অধিকারী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি প্রয়োজন হয়, তারা আবারও কাশ্মীরের কন্যাকুমারী থেকে কপিলমুনির আশ্রমে আসা সাধু-সंतদের সাথে যোগ দেবেন এবং আন্দোলন আরও জোরদার করবেন।
উপ-দূতাবাসের সামনে এবার আবারও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে, যেখানে গত কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন হিন্দু সংগঠন ও সাধু-সন্তরা দিপু দাশ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছে। শুক্রবার সেবার নেতা-কর্মীরা আবারও সামনের পথে নামেন। এই পরিস্থিতি বাংলার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।






