ফরিদপুর উপজেলা, পাবনার চলনবিল অধ্যুষিত একটি অঞ্চল। এই উপজেলা আপনারা জানেন বিভিন্ন মানের দুগ্ধজাত পণ্য যেমন ঘি ও ছানা, তেতুল এবং বিভিন্ন ধরনের তাঁতশিল্প ও কৃষিপণ্যের জন্য খ্যাত। তবে এই এলাকা মূল শহর থেকে অনেক দূরে অবস্থিত হওয়ায় অনেক সময় অবহেলিতও হয়। এটির উন্নয়ন, শিক্ষা, ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয় এখনো। বিশেষ করে, ভূমি ব্যবস্থাপনা, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য ও ভূমি দখলসহ নানা বিষয়ে এটি ছিল চ্যালেঞ্জের কেন্দ্রবিন্দু।
এখানে বিভিন্ন সমস্যা যেমন- মাদক, অবৈধ খাস জমির দখল, খাল দখল ও পুনরুদ্ধার, বাল্যবিবাহ, ইভটিজিং, দ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ, যানজট, কৃত্রিম দুধ ও জাল ঘি, ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন একজন যুব, দায়িত্বশীল ও সাহসী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সানাউল মোর্শেদ।
বিশেষত, সম্প্রতি তিনি ১লা জুলাই ২০২৪ সালে ফরিদপুরে এসিল্যান্ড হিসেবে যোগদান করেন এবং যোগদানের পর থেকেই প্রশাসনিক নানা উন্নয়নমূলক কাজের মাধ্যমে এলাকাকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি ফরিদপুর পৌরসভা ও পুংগলী ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসকের দায়িত্বে আছেন, পাশাপাশি বনওয়ারীনগর ব্যাবসায়ী সমিতির সভাপতি হিসেবেও কাজ করছেন। তাঁর নেতৃত্বে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন, অনলাইন সনদ স্মারক, মশক নিধন اقدامات, সড়কের উন্নয়ন, মাঠ ও পার্কের সংস্কার, প্রেসক্লাব ও বিনোদন কেন্দ্র ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন অব্যাহত।
গত ১৬ মাসে তিনি ৯৬টি মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করেছেন, যার মধ্যে ২৪ জনকে কারাদণ্ড ও ৩১ লাখ ২২ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করেছেন। আরও প্রায় ১২ হাজার মামলা নিষ্পত্তি করেছেন, যা ভূমি উন্নয়ন ও কর সংগ্রহে অগ্রগণ্য ভূমিকা রেখেছে। তিনি চলতি বছরে এক কোটি বিশ লাখেরও বেশি টাকা রাজস্ব আদায় করেছেন। বিশেষ করে, খাস জমির অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও উদ্ধার, বিআরসি মামলার নিষ্পত্তি, খালের দখল সরিয়ে দখলমুক্ত করা, এসব কাজেও তাঁর অবদান অসাধারণ।
একজন ভূমি সেবা গ্রহিতা মো. ঝন্টু মিয়া বলেন, আমি নামজারীর জন্য আবেদন করেছিলাম, এবং খুব অল্প সময়ে সেটি সম্পন্ন হয়েছে। অন্য একজন গ্রহিতা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, আমার মিস কেসও দ্রুত শেষ হওয়ার জন্য আমি খুবই সন্তুষ্ট।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মো. সানাউল মোর্শেদ বলেন, আমি চাই ফরিদপুর একটি উন্নত ও অবহেলিত এলাকা হিসেবে আর থাকবেনা। সাধারণ মানুষের জন্য যে কোনো হয়রানিরোধে আমি কঠোর নজরদারি রাখবো। আমার মোবাইল কোর্টের অভিযান থেকে যেসব জরিমানা হয় সেটি সচেতনতা বৃদ্ধি করতে, শাস্তির জন্য নয়। সমাজের সচেতনতা আর আইনের প্রতি সম্মান থাকলে এই ধরনের অপরাধ কমে আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি। তিনি আরও বলেন, সমাজের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হলে তবেই এ এলাকার উন্নয়ন সম্ভব হবে।






