বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশে কখনোই কোরআন ও সুন্নাহর বিধানের পরিপন্থী বা অন্য কোনও আইন প্রণয়ন হতে দেওয়া হবে না। তিনি স্পষ্ট করে উল্লেখ করেন, আমাদের কখনো চাইনা দেশ আবারও অন্ধকারে ডুবে যাক। বর্তমানে দেশের পরিস্থিতি অনেক কঠিন ও সংকটময়, বিভিন্নভাবে অস্থিরতা ছড়ানোর অপচেষ্টা চলছে। তিনি সবাইকে সাবধান থাকতে আহ্বান জানান।
আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মানকল্যাণ ট্রেনিং সেন্টারে স্থানীয় আলেম-ওলামাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে এড়ানো উচিত যে বিএনপি কোরআন ও সুন্নাহর আইনের বিরুদ্ধে। তিনি গর্বের সাথে ঘোষণা করেন, নিজেকে একজন মুসলমান হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলেন, বিএনপি সব সময়ই ইসলামী মূল্যবোধ ও দেশের ধর্মীয় অনুভূতির রক্ষাকারী দল। তিনি মন্তব্য করেন, সমাজে বিভেদ ছড়িয়ে গেলে কেবল ষড়যন্ত্রকারীরাই তার সুবিধা নেবে, যা পরোক্ষভাবে দেশ ও জাতির জন্য বড় ক্ষতি ডেকে আনে।
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ধর্মীয় নেতাদের জন্য বিশেষ সুযোগ-সুবিধার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মহাসচিব উল্লেখ করেন, প্রতি মসজিদের খতিব, ইমাম ও মাওলানা জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে মাসিক সম্মানী ও ধর্মীয় উৎসবের ভাতা চালু করা হবে। পাশাপাশি, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের জন্যও উদ্যোগ নেওয়া হবে। সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখতে অন্য ধর্মের উপাসনালয়ের প্রধানদেরও মাসিক সম্মানী দেওয়া হবে বলেও তিনি ঘোষণা করেন।
ইসলামের প্রসার ও বিকাশে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অবদানের কথা স্মরণ করে ফখরুল বলেন, মক্কা শরিফের আরাফাত ময়দানে আজও তাঁর রোপিত ‘জিয়া গাছ’ শান্তির ছায়া দিচ্ছে। তিনি বলেন, দেশের সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ধর্ম রক্ষা করতে বিএনপি ঐতিহাসিকভাবে সবচেয়ে জোরালো ভূমিকা পালন করেছে।
বিগত শাসনামলের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গত ১৭ বছর ধরে দেশের মানুষ তীব্র রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার। ছাত্র-জনতার সাম্প্রতিক আন্দোলনের মাধ্যমে প্রায় ২ হাজারের বেশি মানুষের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অবশেষে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ভালো চিকিৎসা না পাওয়া এবং তার শারীরিক অবস্থা গুরুতর হয়ে ওঠার বিষয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি সবাইকে খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া করতে অনুরোধ করেন। শেষ পর্যন্ত, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে স্থায়ী শান্তি ও সুশাসন প্রতিষ্ঠাই বিএনপির মূল লক্ষ্য বলে পুনর্ব্যক্ত করেন।






