বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দাফন আজ সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেল’état একটি পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়। তিনি শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যানে ও দেশের প্রথম স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হন। দাফনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে মরহুমার কবরের পাশে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ধর্মীয় মোনাজাত এবং শোকপ্রকাশের মধ্য দিয়ে এই রাজনৈতিক পরিবারের শোকের মধ্যযুগ শেষ হলো। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সমাপ্তি সূচিত করেছে।
দাফন কার্যক্রম চলাকালে কবরের পাশে উপস্থিত ছিলেন মরহুমার জ্যেষ্ঠ সন্তান ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান, নাতনি ব্যারিস্টার জাইমা রহমান এবং প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শামীলা রহমানসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। পাশাপাশি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এবং বিএনপি ও তার অঙ্গ-সংগঠনের শীর্ষ নেতারা অশ্রুসিক্ত চোখে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। দাফনের পরপরই মরহুমার স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিটের নীরবতা পালনের সিদ্ধান্ত নেয় দল।
এর আগে সকাল ১১টা ৪৮ মিনিটে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে মরদেহ জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আনা হয়। এরপর বিকেল ৩টা ৩ মিনিটে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে এক বিশাল ও শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা মাত্র দু’ মিনিটের মধ্যে শেষ হলেও লাখো মানুষের উপস্থিতিতে পুরো এলাকা শোকার্ত হয়ে উঠেছিল। জানাজার সময় রাজধানী যেন শোকের নগরীতে রূপ নেয় এবং সর্বত্র মানুষের ঢল নামে। জানাজা শেষে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে মরদেহ বিশেষ প্রটোকলে জিয়া উদ্যানে নিয়ে জানাজা ও ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী দাফন সম্পন্ন হয়।
১৯৩৯ সালে জন্মগ্রহণ করে লিভার সিরোসিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় দীর্ঘ রোগভোগের পরে গতকাল মঙ্গলবার ভোরে ৭৯ বছর বয়সে এ দেশের জনপ্রিয় নেতা ও ‘আপসহীন নেত্রী’ খালেদা জিয়া পরলোকে পাড়ি জমান। তাঁর এই মৃত্যুতে দেশজুড়ে সাধারণ ছুটি ঘোষণা এবং তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হচ্ছে। তাঁর রাজনৈতিক জীবনের দীর্ঘ সংগ্রামের পর প্রিয়জনের পাশে আজ চিরস্থায়ী স্থান লাভ করেছেন। দাফনের পর শেরেবাংলা নগর ও সংসদ ভবন এলাকায় আগের মতো শোকের পরিবেশ বজায় থাকছে, যেখানে শোকাহত মানুষের ভিড় এবং গম্ভীর নীরবতা দমকা বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে। মূলত, এই বিদায়ের মাধ্যমে পুরো দেশ গভীর শোকের ঢেউয়ে ডুবেছে।






